বিদেশ থেকে আনা ফোনসেট নিয়ে ১৪ প্রশ্নের উত্তর

অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টারের (এনইআইআর) কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) নতুন এই প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

এনইআইআর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ৩০ জুনের আগে চালু থাকা সব মোবাইল হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে গেছে। ফলে সেগুলো আর বন্ধ হবে না। তবে কোনো গ্রাহক ১ জুলাই থেকে নতুন মোবাইল ফোন চালু করলে তা বন্ধ না করেই এনইআইআরের মাধ্যমে যাচাই করা হবে। হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।

তবে নতুন এই ব্যবস্থা চালুর পর বিদেশ থেকে কেউ ফোন নিয়ে আসলে কিংবা দেশে থাকা কাউকে উপহার হিসেবে পাঠালে সে ক্ষেত্রে কিভাবে হ্যান্ডসেটটি চালু রাখবেন, সে বিষয়টি তো বটেই, সঙ্গে আরও নানা জিজ্ঞাসার জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

কারও মুঠোফোন চুরি হলে যথাযথ নথি জমা দিয়ে হ্যান্ডসেটটি নিষ্ক্রিয় করার কোনো ব্যবস্থা কি থাকবে?

উত্তর: এই ব্যবস্থা পরীক্ষাকালীন সময় (তিন মাস) অতিবাহিত হওয়ার পর চালু হবে।

অফিশিয়াল হ্যান্ডসেটের IMEI নম্বর বিটিআরসি ডেটাবেইসে যুক্ত হতে সর্বোচ্চ কত দিন সময় লাগতে পারে?

উত্তর: বিটিআরসির পূর্বানুমোদন নিয়ে দেশে উৎপাদিত অথবা আমদানি করা সব হ্যান্ডসেট বিক্রির আগে উৎপাদনকারী/আমদানিকারক বিটিআরসির ডেটাবেইসে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করবেন।

একজনের নামে সর্বোচ্চ কয়টা হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করা যাবে?

উত্তর: কোনো সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়নি। তবে বিদেশ থেকে হ্যান্ডসেট আনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যাগেজ রুল অনুযায়ী একজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে বিনা শুল্কে সর্বোচ্চ দুটি ও শুল্ক দিয়ে আরও ছয়টি হ্যান্ডসেট সঙ্গে আনতে পারবেন।

এনইআইআরের কার্যক্রম কি রাত ১২টা থেকেই কার্যকর হবে? অর্থাৎ রাত ১২টায় যে হ্যান্ডসেটে যে সিম ইনসার্ট থাকবে, সেটাই নিবন্ধিত হবে কি না (বলা হয়েছে ৩০ জুন ২০২১–এর মধ্যে নিবন্ধিত হবে)?

উত্তর: হ্যাঁ।

কারও হ্যান্ডসেটে সিম এক স্লটে নিজের নামে ও দ্বিতীয় স্লটে অন্য কারও নামে নিবন্ধন করা থাকলে কোন সিম থেকে কার নামে হ্যান্ডসেট নিবন্ধিত হবে?

উত্তর: IMEI নম্বর অনুযায়ী প্রতিটি স্লটে ব্যবহৃত সিমের বিপরীতে স্লটের ব্যবহার অনুযায়ী আলাদাভাবে নিবন্ধন করা হবে।

এনইআইআরে বিদেশ থেকে আনা মুঠোফোন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কি টাকা লাগবে?

উত্তর: কোনো টাকা লাগবে না।

বিদেশ থেকে আনা অতিরিক্ত হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য কী কী নথি জমা দিতে হবে?

উত্তর: বিদেশ থেকে আসার সময় সঙ্গে নিয়ে আসা সর্বোচ্চ দুটি ফোন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নম্বর ও পাসপোর্টে ইমিগ্রেশনের দেওয়া আগমনের সিলসংবলিত পাতার স্ক্যান/ছবি লাগবে। বিদেশ থেকে শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে আনা সর্বোচ্চ ছয়টি হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টে ইমিগ্রেশনের দেওয়া সিলসংবলিত পাতার স্ক্যান/ছবি ও কাস্টমস শুল্ক পরিশোধসংক্রান্ত প্রমাণপত্রের স্ক্যান/ছবি লাগবে। বিদেশ থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে আনা ফোন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কমার্শিয়াল ইনভয়েসের স্ক্যান/ছবি, প্রাপকের জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান/ছবি এবং কাস্টমস শুল্ক পরিশোধসংক্রান্ত প্রমাণপত্রের স্ক্যান/ছবি জমা দিতে হবে।

স্বয়ংক্রিয়ভাবে হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হয়েছে কি না জানার উপায় কী? স্বয়ংক্রিয়ভাবে না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

উত্তর: স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন না হলে এসএমএস যাবে। কোনো এসএমএস না গেলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বলে গণ্য হবে। শুধু বিদেশ থেকে আনা ও বিদেশ থেকে উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেটের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের সুযোগ থাকবে। দেশে কেনা হ্যান্ডসেট অবৈধ হলে তা নিবন্ধনের সুযোগ থাকবে না। কেনার আগে হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাই করার সুযোগ রয়েছে।

অনেক আগে কেনা আন–অফিশিয়াল ফোনে ৩০ জুন তারিখে কোনো সিম অ্যাকটিভ না থাকলে বা কোনো কারণে ওই দিন নেটওয়ার্কে যুক্ত না থাকায় হ্যান্ডসেট নিবন্ধন না হলে পরবর্তী সময়ে কী করণীয়?

উত্তর: পরীক্ষামূলক সময়ে হ্যান্ডসেটটি ব্যবহার করা যাবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকসেবা কেন্দ্র থেকে এনইআইআর–সংক্রান্ত কী কী ধরনের সেবা দেওয়া হবে? নিবন্ধনসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে মোবাইল অপারেটরগুলো অপারগ হলে গ্রাহকের করণীয় কী?

উত্তর: এনইআইআর–সংক্রান্ত সব সেবা প্রদানের জন্য মোবাইল অপারেটরদের ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সে অনুযায়ী মোবাইল অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ার নম্বর ১২১–এ ডায়াল করে এবং অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থেকে এ–সম্পর্কিত সেবা গ্রহণ করা যাবে। কোনো কারণে মোবাইল অপারেটর সেবা দিতে অপারগ হলে বিটিআরসির হেল্প ডেস্ক নম্বর ১০০–এ ডায়াল করে এ–সম্পর্কিত সেবা নেওয়া যাবে। এনইআইআর–সংক্রান্ত সব তথ্য neir.btrc.gov.bd তে দেওয়া রয়েছে।

একটা সিম কার্ডের সঙ্গে হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে নতুন সিম কার্ডের সঙ্গে নিবন্ধন করা যাবে কি না?

উত্তর: পরীক্ষামূলক সময়কালে তিন মাস ডি-রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই হ্যান্ডসেট হস্তান্তর করা যাবে। উল্লেখ্য, একজন গ্রাহক নিজ নামে নিবন্ধন করা যেকোনো সিম দিয়ে যেকোনো হ্যান্ডসেট ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষামূলক সময় অতিবাহিত হলে ডি-রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।

*১৬১৬১# USSD ডায়াল করে ব্যবহৃত মুঠোফোনের বর্তমান অবস্থা যাচাই প্রক্রিয়া এখনো অ্যাকটিভ না, কবে নাগাদ অ্যাকটিভ হবে?

উত্তর: ১ জুলাই থেকে *১৬১৬১# USSD ডায়াল করে ব্যবহৃত হ্যান্ডসেটের বর্তমান অবস্থা যাচাই করা যাবে।

আন্তর্জাতিক ও দেশি ই-কমার্স থেকে মুঠোফোন কেনার ক্ষেত্রে তো বৈধতা যাচাইয়ের কোনো সুযোগ থাকছে না, সে ক্ষেত্রে করণীয় কী?

উত্তর: দেশি ই-কমার্স থেকে মুঠোফোন কেনার ক্ষেত্রে বৈধতা যাচাই করা যাবে। মুঠোফোনে ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD১৫ ডিজিটের IMEI নম্বর লিখে ১৬০০২ নম্বরে প্রেরণের মাধ্যমে যাচাই করা যাবে। বিদেশ থেকে ব্যক্তিপর্যায়ে বৈধভাবে কেনা বা উপহার পাওয়া মুঠোফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেটওয়ার্কে সচল হবে। ১০ দিনের মধ্যে অনলাইনে তথ্য/দলিল জমা দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য এসএমএস দেওয়া হবে। ১০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করলে হ্যান্ডসেটটি বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। নিবন্ধন সম্পন্ন করা না হলে হ্যান্ডসেটটি বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে না এবং সেগুলো সম্পর্কে গ্রাহককে এসএমএসের মাধ্যমে অবহিত করে পরীক্ষাকালীন সময়ের জন্য নেটওয়ার্কে সংযুক্ত রাখা হবে। পরীক্ষামূলক সময় অতিবাহিত হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যেহেতু MSISDN ও NID–এর মাধ্যমে মুঠোফোন নিবন্ধিত হচ্ছে, সেটার পরবর্তী সময়ে মালিকানা পরিবর্তনের সুযোগ আছে কি?

উত্তর: পরীক্ষামূলক সময়কালে তিন মাস ডি-রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই হ্যান্ডসেট হস্তান্তর করা যাবে। পরীক্ষামূলক সময় অতিবাহিত হলে ডি-রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!