বিজিএমইএ নেতার গার্মেন্টসে অসন্তোষ, শ্রমিকরা আমরণ অনশনে
শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, বকেয়া বেতন আদায়, শ্রমিকদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবি সহ ৭ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নেমেছেন চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা। বুধবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই আন্দোলন।
চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম। এর উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার ছেলে সাকিফ আহমেদ সালাম। তিনি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকও। এশিয়ান অ্যাপারেলসের ওয়েবসাইটে তাদের গ্রাহক হিসেবে ওয়ালমার্ট, টার্গেট, কার্টারস, এইচএন্ডএম, জেসি পেনি, এলসি ওয়াইকিসহ বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা রয়েছে। সত্যিই গ্রাহক কিনা— এই তথ্য চট্টগ্রাম প্রতিদিন তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গার্মেন্টস শ্রমিকরা জানান, বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিকাল ৩ টায় ছাঁটাই করা শ্রমিকদের নিয়ে একটি সমন্বিত বৈঠকের ডাক দেয় মালিকপক্ষ। কিন্তু সেদিন ছাঁটাই করা শ্রমিকদের বিষয়ে কোন সমাধান হয়নি। পরে রবিবার (৮ মার্চ) সকালে শ্রমিকদের সাথে প্রোডাকশন ইস্যুতে বাকবিতণ্ডা হয় কারখানার মালিকপক্ষের কয়েকজন কর্মীর সাথে। এ ঘটনার জেরে ওই দিন দুপুরে ডিরেক্টর শফিক, জিএম মোস্তফা, নাসরিন ও শরিফসহ বেশ কয়েকজন মিলে নিরীহ শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়।
পরে তড়িঘড়ি করে ওই রাতেই হঠাৎ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেয় দেয় মালিকপক্ষ। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। তবে কারখানা বন্ধ থাকার পরও অনেক শ্রমিককে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শ্রমিকরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের জন্যই নোটিশ ছাড়াও নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে মালিকপক্ষ।

শ্রমিকদের ৭ দফার দাবির অন্যান্যগুলো হলো কারখানা শ্রমিকদের ওপর মালিকপক্ষের হামলা বন্ধ করা, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, সকল শ্রমিককে কাজে যোগদানের অনুমতি দেওয়া এবং ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া বন্ধ করা।
এদিকে হঠাৎ শ্রমিকদের এমন কর্মসূচির কারণে চেরাগি পাহাড়, আন্দরকিল্লাসহ জামালখান এলাকার আশপাশে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। স্কুল-কলেজ শুরু ও ছুটির সময়ে শুরু হওয়া এ আমরণ অনশন কর্মসূচির কারণে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এএ/সিপি