বিজিএমইএ নির্বাচন, চট্টগ্রামসহ দেশের গার্মেন্টস সেক্টর সরগরম—লড়াইয়ে দুটি প্যানেল

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠেছে চট্টগ্রামসহ দেশের গার্মেন্টস সেক্টর। দুটি প্যানেল ইতিমধ্যেই প্রচারণা শুরু করেছে। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম নামে দুটি প্যানেলের প্রার্থীরা প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করেছেন বিভিন্নস্থানে। প্যানেল পরিচিতি নিয়ে প্রচারণা বাদ যায়নি চট্টগ্রামেও।

জানা যায়, আগামি ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সমিতির ৩৫টি পরিচালক পদের জন্য দুই প্যানেলের ৩৫ জন করে মোট ৭০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ঢাকা অঞ্চলে ১ হাজার ৮৫৩ জন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৪৬১ জন ভোটার রয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সরগরম হয়ে ওঠছে নির্বাচনের মাঠ। এরমধ্যে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামের ভোটারদের সাথেও পরিচয় পর্ব সেরে গেছেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামি ৪ এপ্রিল ঢাকায় হোটেল রেডিসন ব্লুতে এবং চট্টগ্রামে বিজিএমইএর আঞ্চলিক কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। এবারের নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি রুবানা হকের প্যানেল ‘ফোরাম’ এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন হান্নান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শামসুদ্দিন মিয়া। রুবানা নিজেও তার প্যানেল থেকে নির্বাচনে থাকছেন। আর ‘সম্মিলিত পরিষদ’ এর নেতৃ্ত্ব দিচ্ছেন জায়ান্ট টেক্সটাইলের ফারুক হাসান। তিনি প্যানেল লিডার হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনের বিষয়ে ফোরাম-এর শামসুদ্দিন বলেন, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের তৎপরতা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে। স্বচ্ছতার জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা তৈরির কথা আমরা বলে আসলেও প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ তাতে বাধা দিচ্ছেন। এছাড়াও তারা আমাদের বিষয়ে বিভিন্নস্থানে আপত্তিজনক কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাদের এখনকার প্রেসিডেন্ট রুবানা হককে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ফোন করে যে কোনো সমস্যার কথা বলতে পেরেছেন ভোটাররা। কিন্তু অন্য প্যানেল থেকে নেতা নির্বাচিত হলে সেই সুযোগটি পাওয়া যাবে না বলেই ভোটারদের ধারণা। এছাড়াও যে কোন সমস্যায় আমাদের প্যানেলের প্রেসিডেন্টকে পাওয়া গেছে।

ফোরামের প্রার্থী চট্টগ্রামের অ্যারিয়ন ড্রেসের মোহাম্মদ আতিক বলেন, পূর্বেও বিজিএমইএ’র পরিচালক ছিলাম আমি। কারখানার সুখে দুঃখে মানুষের সেবা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছি। করোনা মহামারিতেও আমি মাঠে ছিলাম। শ্রমিক মালিকদের খোঁজখবর নিয়েছি। এবারও প্রার্থী হয়েছি, আশা করছি সম্মানিত ভোটারা আমাকে মুল্যায়ন করবেন।

অপর দিকে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল নেতা ফারুক হাসান বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও সুন্দর একটি নির্বাচন চাই। বিজিএমইএ ভবনে ভোট গ্রহণ হলে কোন সমস্যা নেই। আমরা চাই বর্তমান সময়ে গামের্ন্টেসের দুর্দশা দূর করা। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। আমি আমার প্যানেলের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

সম্মিলিত পরিষদের অপর প্রার্থী চট্টগ্রামের ফোর এইচ অ্যাপারেলের মো. হাসান জেকি বলেন, আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমরা চাই চট্টগ্রামসহ দেশের গামের্ন্টস শিল্পের আরো বিকাশ হোক। মালিক শ্রমিকদের দূরত্ব কমিয়ে ব্যবসা বন্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হোক। গামের্ন্ট সেক্টরের উন্নয়নে সম্মিলিত পরিষদ কাজ করবে।

চূড়ান্ত প্রার্থী যারা
ফোরাম: এ প্যানেলে হান্নান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শামসুদ্দিন মিয়া প্যানেল লিডার হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চট্টগ্রাম অঞ্চলে অ্যারিয়ন ড্রেসের মোহাম্মদ আতিক, চিটগং এশিয়ান অ্যাপারেলসের মোহাম্মদ আবদুস সালাম, ক্লিপটন অ্যাপারেলসের এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ম্যাগি অ্যান্ড লিজ অ্যাপারেলসের এনামুল আজিজ চৌধুরী, মেলো ফ্যাশনসের শরীফ উল্লাহ, রিজি অ্যাপারেলসের মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী, রেন্সকো সোয়েটারের মোহাম্মদ দিদারুল আলম, দ্য নিড অ্যাপারেলসের রিয়াজ ওয়েজ ও উল ওয়ার্ল্ডের খন্দকার বেলায়েত হোসেন ফোরাম থেকে নির্বাচন করছেন।

সম্মিলিত পরিষদ: জায়ান্ট টেক্সটাইলের ফারুক হাসান প্যানেল লিডার হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চট্টগ্রাম অঞ্চলে এএসআর অ্যাপারেলের এ. এম শফিউল করিম খোকন, অ্যামেকো ফেব্রিক্সের এম আহসানুল হক, ফোর এইচ অ্যাপারেলের মো. হাসান জেকি, এইচকেসি অ্যাপারেলের রকিবুল আলম চৌধুরী, লেগেসি ফ্যাশন্সের তানভীর হাবিব, এনএলজেড ফ্যাশনসের মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা, আরএসবি ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালের অঞ্জন শেখর দাশ, টপ স্টার ফ্যাশনসের আবসার হোসেন ও ওয়েল ডিজাইনার্সের সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন।

এএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!