বিক্ষোভে ফুসছে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবি
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের (রামেক) অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি হাসপাতাল এলাকা ঘুরে পরে জেলা গণপূর্ত বিভাগের সামনে গিয়ে ঘট্যাব্যাপী সমাবেশ করে। সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে মেডিকেলের পাঁচটি ব্যাচের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে গত বুধবার থেকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের (রামেক) স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন চলমান রেখেছে মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। এর পরদিন বৃহস্পতিবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সমাবেশসহ টানা পাঁচদিন ধরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ অন্যান্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছে পাঁচটি ব্যাচে অধ্যয়নরতরা।
রোববারের সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘টানা পঞ্চমদিনের মতো আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা কারো কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস পাইনি। যদি এমনভাবে চলতে থাকে, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি নিতে পারি। রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে পাঁচটি ব্যাচে মোট ২৫০জন শিক্ষার্থী আছে। কিন্তু দুইটি ক্লাস রুমে ভাগাভাগি করে ক্লাস করতে হচ্ছে সব ব্যাচকে। আমরা আর কোনো আশ্বাস চাই না। স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ কখন শুরু হবে তার সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চাই।’
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, রাঙামাটিতে উন্নতমানের হাতপাতাল না থাকায় জটিল রোগে আক্রান্তদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) উন্নত চিকিৎতসার জন্য পাঠানো হয়। সে কারণে তারা জটিল রোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো শিক্ষা পাচ্ছে না। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে যে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়েছে, তারা তার দ্রুত সমাধান চান।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে একমাত্র রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু করা হয়। দীর্ঘ এই পাঁচ বছর ধরে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে অস্থায়ী ক্যাম্পাসের মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছরই ৫০ করে শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপসহ স্নাতক পর্যায়ের পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হচ্ছে। পুরো পাঁচ বছরে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য দুটি ছাত্রীনিবাস ও তিনটি ছাত্রাবাস করা হয়েছে।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের (রামেক) স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জেলা শহরের অদূরে সুখীনীলগঞ্জ এলাকায় জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ এখনো একাডেমিক ভবন নির্মাণের কার্যক্রম দৃশ্যমান হচ্ছে না। দীর্ঘ পাঁচ ধরে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ ঝুলে থাকায় বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছে মেডিকেল কলেজের পাঁচটি ব্যাচের আড়াইশত শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘স্থাপত্য অধিদপ্তর রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের মাস্টার প্ল্যান করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেওয়ার পর আমাদের কাছে আসলে আমরা খরচ নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করব।’
এএইচ