বাফুফে সভাপতি পদে লড়বেন তরফদার রুহুল আমিন

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) টানা তিন মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে কাজী সালাউদ্দিন ফুটবলের মান কেবল তলানিতে নিয়ে গেছেন বলে বহুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন। আকারে-ইঙ্গিতে বেশ কয়েকবার বাফুফের দায়িত্ব নিতে নিজের আগ্রহের কথাও প্রকাশ করেন তিনি। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে মুখোমুখি হয়ে আবারও বাফুফের বর্তমান কমিটির বিভিন্ন ব্যর্থতা তুলে ধরে আসন্ন বাফুফের নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতার কথা জানান তিনি।

তরফদার রুহুল আমিন জাতীয় ফুটবল দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতা, পাইপপাইনে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় সংকট, বাফুফের আসন্ন নির্বাচনসহ নানান বিষয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাফল্যহীন দেশের ফুটবল। এসএ গেমসে অনেকদিন ধরেই সাফল্যহীন দেশের ফুটবল। সবশেষ নেপালে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসেও ব্যর্থতার সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছে দল। নেপাল, ভুটানের মতো দলের বিপক্ষে আমরা জিততে পারিনি। এমন ব্যর্থতার পরও সেটা নিয়ে পোস্টমর্টেম হয়নি। কেন এমন ব্যর্থতা তা নিয়ে মোটেও মাথা নেই বাফুফের। থাকলে এসএ গেমসে কেন খারাপ করলো দল, সেটার একটা তদন্ত কমিটি গঠন করত বাফুফে। তা না করে তড়িঘড়ি করে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজন করেছে। সেখানেও সাফল্য পায়নি। প্যালেস্টাইন খেলতে এসেছে। তারা ভালো দল। কিন্তু কি মানের দল এসেছে আপনারা দেখেছেন। প্যালেস্টাইনে জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিল মাত্র ৫-৬ জন। আফ্রিকা থেকে বুরুন্ডি খেলতে এসেছে। তারাও ভালো দল। তবে যে দলটি খেলেছে সেই দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় অনুর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলার। তারপরও ভালো বলতাম যদি গোল্ডকাপে আমরা প্যালেস্টাইন কিংবা বুরুন্ডিকে হারাতে পারতাম। কিন্তু সেটা করতে পারেনি।’

তিনি এসব কিছুর জন্য বাফুফের বর্তমান কমিটিকেই একমাত্র দায়ী বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ‘বাফুফের বর্তমান কমিটি অনেকদিন ধরে ক্ষমতায়। কিন্তু এতদিনেও তারা একটা শক্তিশালী ফুটবল কাঠামো তৈরি করতে পারিনি। জাতীয় দলের পাইপলাইন শক্ত থাকলে এসএ গেমসে, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দল বাজে ফল করতো না। আপনার হাতে বিকল্প খেলোয়াড়, সাইড বেঞ্চে অতিরিক্ত রিসোর্স থাকলে নিশ্চয় আপনি ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত খেলোয়াড়দের মাঠে নামাতেন না।’

সামনেই বাফুফের নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে বাস্তবমুখী এবং যুগোপযোগী ইশতেহার নিয়ে মাঠে নামবেন বলে জানান তরফদার রুহুল আমিন। এ ব্যাপারে তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘আপনারা জানেন সামনে আমাদের ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন। মিটিংয়ে নির্বাচনমুখী আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনকে আমরা কীভাবে সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারি এটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকে আমাকে নমিনেশন দেয়া হয়েছে। ফেডারেশনের পরবর্তী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য এবং আমাকে বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস অ্যাসোসিয়েশন থেকেও নমিনেশন দেয়া হয়েছে, এপ্রিলে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের মিটিংয়ে যারা এসেছেন, তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন। কার্যনির্বাহী কমিটির প্রায় ৪০ জন সদস্য এখানে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন জেলা ও বিভিন্ন বিভাগ থেকে। সবার একটাই মত বর্তমান কমিটি ১২ বছর ফুটবলকে রোল করেছে, কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবলের কোনোই উন্নতি হয়নি। বরং গত ১২ বছরে ফুটবলের ভীষণ রকমের ক্ষতি হয়ে গেছে। আমরা একটি শক্তিশালী কমিটি তৈরি করব, যে প্যানেলটা তৈরি হবে সেটি আসন্ন ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আমাদের বিশ্বাস আমাদের কমিটি যদি দায়িত্ব পায়, তাহলে আগামী চার বছরে আমরা বাংলাদেশের ফুটবলের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারব।’

এই সময় বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি ও প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুদ্দীন মো. আলমগীরসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!