চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ পরিণতি। পরিবারের দুই শিশুর তুচ্ছ বিবাদকে ঘিরে বড় ভাই আলী হোসেনের (৪৪) হাতে খুন হয়েছেন ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন (৪০)।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের উত্তর মরগাং এলাকার ভোলা মেম্বারের পুরোনো বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুদের ঝগড়া থেকে রক্তাক্ত সংঘর্ষ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে শাহাদাত হোসেনের মেয়ে সাবিহা সাবরিন মিমির স্কুলব্যাগে বড় ভাই আলী হোসেনের ছেলে রনি বালি ঢুকিয়ে দেয়। এ নিয়ে দুই শিশুর মধ্যে ঝগড়া বাধে। পরে বিষয়টি নিয়ে দুই ভাইয়ের স্ত্রীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই তর্কে জড়িয়ে পড়েন শাহাদাত ও আলী হোসেন। একপর্যায়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বড় ভাই আলী হোসেন ছোট ভাই শাহাদাতের গলা টিপে ধরেন। এতে শ্বাসরোধ হয়ে শাহাদাত মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (মস্তাননগর) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর আলী হোসেন ও তার স্ত্রী ছলিমা খাতুন (৪০) পালিয়ে যান। পরে পুলিশ দুই ঘণ্টার মধ্যেই ওচমানপুর এলাকা থেকে দুজনকেই গ্রেপ্তার করে।
নিহত ও অভিযুক্তের পরিচয়
নিহত শাহাদাত হোসেন স্থানীয় মৃত নুর আহমেদের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। অপরদিকে বড় ভাই আলী হোসেন লাইটার জাহাজে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসকের বর্ণনা
স্থানীয় বাসিন্দা জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ ফরহাদ জানান, শাহাদাত দুপুরে কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে খাবার খাওয়ার সময় বড় ভাইয়ের সঙ্গে কথাকাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে আলী হোসেন গাছের গুড়ি দিয়ে আঘাত করলে শাহাদাত মাটিতে পড়ে যান। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘বেলা আড়াইটার দিকে পরিবারের লোকজন শাহাদাত হোসেনকে হাসপাতালে আনেন। পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন ও কাঁধে আঘাত ছিল।’
পুলিশের বক্তব্য
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আবদুল হালিম বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই খুনের ঘটনায় আমরা দুই ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত আলী হোসেন ও তার স্ত্রী ছলিমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’



