বাকলিয়ায় মোটরসাইকেল নিয়ে এক পুলিশের অভিনব নাটক

থানায় মোটরসাইকেল আটকে রেখে টাকা দাবির অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। পরে মোটরসাইকেল মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে ‘টাকা চাওয়া হয়নি’ বলে স্বীকারোক্তি নিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই পুলিশ সদস্যের নাম মিঠুন দাশ। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানায় এএসআই হিসেবে কর্মরত আছেন।

জানা গেছে, রোববার (১০ জুলাই) রাতে ঈদ উপলক্ষে বাকলিয়ার এক্সেস রোড এলাকায় বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যান মোটরসাইকেল মালিক নেওয়াজ শরিফ ওমি। ওই সময় বাসার পাশে মোটরসাইকেল পার্কিং করেন তিনি। ভোর ৫টার সময় মোটরসাইকেল দেখতে না পেয়ে খুঁজতে থাকেন ওমি। তখন পাশের এক দোকানদার জানান, গাড়ি পুলিশ নিয়ে গেছে।

ওইদিন ওমি থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ তাকে গাড়ির কাগজ নিয়ে যেতে বলে। এর কিছুদিন পর গাড়ির কাগজ নিয়ে গেলেও পরে ওমির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন এএসআই মিঠুন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নানা অযুহাতে মোটরসাইকেল আটকে রাখেন তিনি।

সাধারণত কোনো গাড়ি অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার হলে পুলিশ গাড়ি জব্দ করে। এছাড়া অবৈধ পার্কিং করলে নো-পার্কিং মামলা করে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া মোটরসাইকেলটি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মোটরসাইকেলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করা হয়েছে।

কিন্তু এরপরও মোটরসাইকেলের মালিক ওমি মালিকানার কাগজ নিয়ে যাওয়ার পরও গাড়ি আটকে রাখা হয়।

মোটরসাইকেল মালিক নেওয়াজ শরিফ ওমি বলেন, ‘আমাকে গাড়ির কাগজ নিয়ে দেখা করতে বলেন এএসাই মিঠুন। কাগজ ঠিক থাকলে গাড়ি দিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি। পরে কাগজ নিয়ে গেলে তিনি মোটরসাইকেলটির আগের মালিককে নিয়ে আসতে বলেন। আমি একমাস আগে আমার বন্ধু থেকে কিনেছি গাড়িটি। ওই বন্ধুকে থানায় নিয়ে গেলে তিনি আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। আমার গাড়ির কাগজ যেহেতু সব ঠিক আছে, টাকা দিইনি আমি। এরপর তিনি আমাকে জোর করে ‘টাকা দাবি করেননি’ বলতে বলে একটি ভিডিও ধারণ করেন। সর্বশেষ গত ১৯ জুলাই পরিদর্শক (তদন্ত) আমাকে আবার বলেন, গাড়ির কাগজ নিয়ে দেখা করতে। গাড়ির মালিকানা কাগজ, ক্রয়ের শো-রুম কপি নিয়ে গেলেও মোটরসাইকেল দেননি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই মিঠুন দাশ বলেন, ‘গাড়ি কোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওরা (মোটরসাইকেল মালিক) এসেছিল। আপনি (প্রতিবেদক) থানায় আসেন, চা খেয়ে কথা বলি।’

এরপরই মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে তিনি কল কেটে দেন। টাকা দাবির বিষয়ে জানতে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘মোটরসাইকেলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করা হয়েছে। আমরা সেটি কোর্টে পাঠিয়েছি। আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।’

টাকা চাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm