বাকবিতণ্ডার জের: বাস চাপায় জিপ চালকের মৃত্যু খাগড়াছড়িতে

ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা, বিক্ষোভ-ভাংচুর

খাগড়াছড়িতে বাস চাপায় এক পরিবহণ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ি শহরে। বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শান্তি পরিবহণের কাউন্টার ও বাসসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে। হামলা ও ভাংচুরের দীর্ঘ চারঘণ্টা পর শান্তি পরিবহণ চলাচল স্বাভাবিক হয়।

জানা যায়, বুধবার সকালে দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের পাঁচমাইল এলাকায় গাড়ি সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে শান্তি পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ও শ্রমিকবাহী একটি চাঁদের গাড়ি চালকের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় মারামারিতে লিপ্ত হয়।

এতে জিপ চালক আইয়ুব আলী (২৪) আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরে শান্তি পরিবহণের বাস টেনে চলে যাওয়ার সময় তার নিচে চাপা পড়েন আইয়ুব আলী। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। নিহত আইয়ুব আলী খাগড়াছড়ি জেলা শহরের শালবন গরুরগাড়ি টিলার ফজলু মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনার পর শ্রমিকরা ফুঁসে উঠে খাগড়াছড়ি শহরের পৌরসভার সামনে শান্তি পরিবহণের গাড়ি ও কাউন্টার ভাংচুর করে। এ সময় শ্রমিকদের হামলায় যাত্রী, দোকান কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রশিদ জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘাতক বাসটি আটক করা গেলেও চালক পলাতক রয়েছে।

অপরদিকে সড়ক পরিবহণ চালক মালিক গ্রুপের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু তৈয়ব বলেন, দীঘিনালা সড়কে শান্তি পরিবহণ ও জিপ গাড়ি সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংগঠিত ঘটনা আর হামলার ঘটনা ভিন্ন সূত্রে গাঁথা।

কারা শান্তি পরিবহণ, কাউন্টার ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত তা ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত এবং আইনি প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

অপরদিকে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফেরাতে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ পরিবহন নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসে শান্তি -শৃঙ্খলা ও যানবাহণ চলাচল স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ জানান।

পরে খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপ (শান্তি পরিবহণ) কার্যালয়ে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শানে আলমের উপস্থিতিতে বৈঠকে জনদুর্ভোগ রোধে পরিবহণ চলাচল স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রশিদ।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!