বাংলাদেশ সরকারের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালে, কিভাবে গেল কেউ জানে না

এমনটা সাম্প্রতিক অতীতে কখনও শোনা যায়নি। পাউচের গায়ে বাংলা হরফে লেখা, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ, ক্রয় বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয়’। কবে ওষুধের মেয়াদ শেষ, তারও উল্লেখ নেই। বাংলাদেশ সরকারের এই ওষুধই দেওয়া হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক মহকুমা হাসপাতালে! কিভাবে বাংলাদেশের সরকারি ওষুধ ভারতে ওই হাসপাতালে পৌঁছল, তা জানে না পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রশ্ন উঠতেই খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খবর জানিয়েছে ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার।

ঘটনাস্থল পশ্চিমবঙ্গের কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের আউটডোর। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) একাধিক রোগী চিকিৎসা করাতে এসে ডাক্তার দেখানোর পর হাতে পেলেন প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ। তাদেরই কেউ কেউ পেলেন ডক্সিসাইক্লিন ক্যাপসুল। কিন্তু ওষুধের পাউচের গায়ে বাংলা হরফে লেখা, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ, ক্রয় বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয়’।

সেই ওষুধের মোড়কে কবে তৈরি বা কবে মেয়াদ শেষ— কোনও কিছুরই উল্লেখ নেই। বিষয়টি নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কিভাবে এমনটা হয়েছে তা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তবে প্রশাসনের দাবি, এই ওষুধ পাঠানো হয়েছে কলকাতা থেকে।

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি এ বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, ‘বিষয়টি নজরে আসার পর প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছে, কলকাতার সরকারি স্টোর থেকেই এই ওষুধগুলি এসেছে। তবে আসলে কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য জেলার ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই পরিষ্কার হবে, ওষুধগুলি নিয়ে কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা। তার আগে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’

তবে বাংলাদেশ সরকারের ওষুধ কিভাবে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতালে গেল এবং কিভাবেই বা তা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের দেওয়া হল— তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটতে দেখেননি বলে দাবি করে দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাসের বক্তব্য, ‘ভারতে উৎপাদিত ওষুধের পরিবর্তে আচমকা বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ কেন আনা হয়েছে, তা আমাদের জানা প্রয়োজন। তা ছাড়া এই ওষুধের উৎপাদন বা মেয়াদের তারিখ কেন উল্লেখ নেই, তা নিয়েও প্রশ্ন জাগছে। ইতিমধ্যে কাঁথি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ওগুলি সরকারিভাবে সাপ্লাই হয়েছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ বাংলাদেশ থেকে কোন পথে ভারতে এল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’

ওই বিজেপি নেতা আরও জানান, ‘বিষয়টি কেন্দ্রের নজরে আনার জন্যও আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। রাজ্য সরকারের তরফে বাংলাদেশ থেকে আসা ওষুধের বিষয়ে স্পষ্ট জবাব না পেলে ঘটনাটির জন্য কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!