বলাৎকারে ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের যুবক শোধ নেন দোকানিকে খুন করে

মো. আদনান জিসানের সঙ্গে চার-পাঁচ মাস আগে পরিচয় হয় মুদির দোকানদার শাহাদাত হোসেনের। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। একদিন রাতে বাসায় ঢুকতে না পেরে শাহাদাতের বাসায় থেকে যান জিসান। ওইরাতে জিসানকে বলাৎকার করতে চান শাহাদাত। কিন্তু সেবার ব্যর্থ হন।

পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দোকানের মালামাল চুরির মামলার ভয় দেখিয়ে শাহাদাত কয়েকবার বলাৎকার করেন জিসানকে। এভাবে অতিষ্ঠ হয়ে শাহাদাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জিসান। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আরেকবার বলাৎকার করতে গেলে শাহাদাতকে খুন করেন জিসান।

শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার মুনসুরাবাদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর ও পশ্চিম) মুহাম্মদ আলী হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার জিসান (২০) চট্টগ্রামের হালিশহর থানার সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি চন্দনাইশের বৈলতলী এলাকায়।

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারার উপজেলার তেকোটা এলাকা থেকে জিসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিহত শাহাদাত নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার দক্ষিণ চরমুজিব গ্রামের বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জিসানকে বলাৎকারের করা নেশায় পরিণত হয় শাহাদাতের। ২০২১ সালের ৩১ জুলাই রাত দেড়টার দিকে শাহাদাতকে ফোন করে তার বাসায় যান জিসান। শাহাদাত মুদির দোকান বন্ধ করে জিসানকে দোকানের পেছনে বাথরুমে নিয়ে যান। সেখানে আলো বন্ধ করে দিয়ে জিসানকে বলাৎকার করতে যান তিনি। এ সময় জিসান পকেট থেকে ছুরি বের করে শাহাদাতের পেটে তিনবার এবং পায়ে ও হাতে একবার করে ছুরিকাঘাত করেন।

এ সময় শাহাদাত চিৎকার করে উঠলে আসামি তার গলাচেপে ধরে। শাহাদাতের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জিসান ঘটনাস্থলে অন্তত আট মিনিট অবস্থান করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হলে জিসান বোনের বাড়িতে পালিয়ে যান।

মামলার তদন্ত কাজে শুরুতে হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে নিহতের মোবাইল কললিস্ট দেখে জিসানকে শনাক্ত করা হয়। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারার উপজেলার তেকোটা এলাকা থেকে জিসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত শাহাদাতের মোবাইলও জব্দ করা হয়।

এর আগে ২০২১ সালের ১ আগস্ট চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার দাইয়াপাড়া এলাকার একটি মার্কেটের টয়লেট থেকে শাহাদাত হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের বাবা ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর হত্যার তদন্ত করতে মাঠে নামে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এমএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm