বঙ্গোপসাগরে আটকাপড়া দুই শতাধিক পর্যটক কক্সবাজার ফিরেছে

প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ফেরার পথে দুই শতাধিক পর্যটক নিয়ে সাগরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়া ‘এস.টি ভাষা শহীদ সালাম’ নামের জাহাজের পর্যটকরা কক্সবাজার ফিরেছে। রোববার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে সেন্টমার্টিন ঘাট ত্যাগ করে টেকনাফ আসার পথেই বিকেল ৪টার দিকে বঙ্গোপসাগরে জাহাজের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে কয়েক ঘন্টা জাহাজটি সাগরে ভাসতে থাকে।

একপর্যায়ে পর্যটকরা ৯৯৯ এ ফোন করে। পরে তৎক্ষাণিক উদ্ধার অভিযান চালিয়ে জাহাজের পর্যটকদের স্পিডবোট ও ট্রলারে করে পুনরায় সেন্টমার্টিন ঘাটে নিয়ে যায় পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। কিন্তু ওই সময় আর কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে না থাকায় পর্যটকরা কক্সবাজার ফিরতে পারেনি।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই জাহাজের দুই শতাধিক পর্যটক অন্য জাহাজের মাধ্যমে কক্সবাজার ফিরেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, বিকল ইঞ্জিন ঠিক করার নামে প্রায় তিন ঘণ্টা ভাসিয়ে রাখা হয় জাহাজটি। জাহাজটি ধীরে ধীরে মিয়ানমার জলসীমার দিকে ভেসে যাচ্ছে দেখে আতঙ্কিত পর্যটকদের কয়েকজন জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চান। পরে সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় সন্ধ্যার দিকে জাহাজটি সেন্টমার্টিন তীরে নিয়ে যাওয়া হয়।

দ্বীপে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে যাওয়া টেকনাফ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে এস.টি ভাষা শহীদ সালাম জাহাজটি চলতি মৌসুমে রোববারই প্রথম আড়াই শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রা শুরু করে। অর্ধ-শতাধিক পর্যটক রাত্রিযাপনের জন্য থেকে গেলেও বাকি দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে টেকনাফ ফেরার পথে এ দুর্ভোগে পড়েন তারা।’

চট্টগ্রামের খুলশী এলাকার পরিবার পরিজন নিয়ে সেন্টমার্টিন ডে-ট্যুরে বেড়াতে যাওয়া সিফাত আল মামুন জানান, সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ নিয়ে একটি অকল্পনীয় অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। তিনি বলেন, দ্বীপ থেকে ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে বঙ্গোপসাগরে তিন ঘণ্টা ভাসমান থেকেছি। ৯৯৯-এর সহযোগিতা না পেলে হয়তো আমরা মিয়ানমার জলসীমা অতিক্রম করে সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হতাম। পর্যটনশিল্প বিকাশে সেন্টমার্টিন নৌপথে এমন লক্কর-ঝক্কর জাহাজ চলাচল বন্ধ করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘দ্বীপ থেকে দুই শতাধিক পর্যটক নিয়ে একটি পর্যটকবাহী জাহাজ টেকনাফে ফেরার পথে মাঝ সাগরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে স্পিডবোট ও ট্রলারে করে পর্যটকদের উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে নিয়ে আসা হয়।

জাহাজটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ করিম বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে জাহাজটি রোববারই প্রথম আড়াই শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রা শুরু করে। অর্ধশতাধিক পর্যটক রাত্রিযাপনের জন্য থেকে গেলে বাকি দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে টেকনাফ ফেরার পথে এ দুর্ভোগে পড়েন তারা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জাহাজ বিকল হওয়ায় পর্যটকরা টেকনাফে ফিরতে পারেনি। পরদিন সোমবার সবাই নিরাপদে ফিরেছেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm