বঙ্গবন্ধুর কর্মী থেকে শেখ হাসিনার সংসদে মোছলেম

দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তৃণমূল থেকে উঠে এসে শেষ বয়সে এসে সংসদে যাওয়ার সুযোগ মিলেছে মোছলেম উদ্দিন আহমদের। এরআগে পটিয়া থেকে দুই বার সংসদে যাওয়ার টিকিট পেলেও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তখন। ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে শুরু করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে আসীন হন তিনি। দলীয় পদ পেলেও মন্ত্রী এমপি পদে নিজকে অধিষ্ঠিত করার বাসনা ছিল অনেক দিনের। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর কর্মী থেকে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জাতীয় সংসদে যাওয়ার সুযোগ পান তিনি।

মোছলেম উদ্দিন নৌকা প্রতীক নিয়ে ধানের শীষের আবু সুফিয়ানের থেকে ৬৯ হাজার ৩১১ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

ষাটের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম চট্টগ্রাম নগরীতে বেশ কয়েকটি অপারেশনে অংশ নেন। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছায়াসঙ্গী হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দলকে সংগঠিত করতে যে ক’জন নেতা ভূমিকা রেখেছিলেন, মোছলেম উদ্দিন তাদের অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের পরে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতিও হন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি চট্টগ্রাম পৌরসভার লালখান বাজার ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে দলের সিদ্ধান্তে দক্ষিণ চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি । দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক থেকে বাবুর মৃত্যুর পর সভাপতি পদে আসেন মোছলেম।

১৯৯৬ সালে পটিয়া থেকে আওয়ামী লীগের মনোনায়ন পান মোছলেম।২০০১ সালের নির্বাচনে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বোয়ালখালী থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সেবারও তাকে পটিয়া আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু বিএনপির প্রার্থী গাজী শাহজাহান জুয়েলের কাছে তিনি হেরে যান। এরপর ২০০৮ সাল থেকে গত তিনটি নির্বাচনে তিনি বোয়ালখালী থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছিলেন। মহাজোটের রাজনীতির জন্য আসনটি বারবার জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদলকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমদ, বিএনপির আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এসএম আবুল কালাম আজাদ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ আহমদ, ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মূলত ভোটের লড়াই হয়েছে বিএনপির আবু সুফিয়ান এবং আওয়ামলী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমদের সঙ্গে।

ইসি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল, পশ্চিম গোমদণ্ডী, পূর্ব গোমদণ্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনের মোট ১৭০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি কেন্দ্র নগরীর অংশে পড়লেও বাকী ৬৯টি কেন্দ্র রয়েছে বোয়ালখালীতে। নগরীতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন প্রায় ১৭০০ পুলিশ সদস্য আর বোয়ালখালীতে ১২৫০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া প্রত্যেক কেন্দ্রে গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!