বগুড়ার দশম শ্রেণির ছাত্র এক ভ্যানচালককে খুন করে চট্টগ্রামে পালিয়ে এসেছিলেন খুনের মূল হোতা রিজু।
সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-৭ এর একটি দল একাধিক অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি রিজুকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের পর রিজু প্রথমে গাজীপুরে আত্মগোপন করে এবং পরে চট্টগ্রামে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
গত ৩০ মার্চ বগুড়ার বগুড়ার কাহালু উপজেলার দুপচাঁচিয়া ঘুরতে যাওয়ার জন্য বিজয়ের ভ্যান ভাড়া করেন রিজু ও তার এক সহযোগী। বিজয় বেশি টাকার আশায় ভাড়ায় যেতে রাজি হন। তারা বিকেল পর্যন্ত দুপচাঁচিয়ায় ঘোরাঘুরি করেন। পরে সন্ধ্যার দিকে গাবতলী ফিরতি পথে কাহালু উপজেলার নারহট্ট এলাকায় বিজয়কে খুন করে রিজু ও তার এক সহযোগী। পরের দিন উপজেলার নারহট্ট ইউনিয়নের ভ্যাপড়া গ্রামের একটি ডোবা থেকে বিজয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বিজয় পড়ালেখার পাশাপাশি তার অসচ্ছল বাবাকে আর্থিক সহায়তার জন্য ভ্যান চালাতেন। হত্যাকাণ্ডের পর ১ এপ্রিল নিহত বিজয়ের বাবা কাহালু থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে।
ফাহারুল ইসলাম বিজয় (১৮) হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
নিহত ফাহারুল ইসলাম বিজয় (১৮) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের লিটন আলীর ছেলে। তিনি সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। সংসারে অভাব থাকায় পড়ালেখার পাশাপাশি বিজয় মাঝেমধ্যে ভ্যান চালাতেন।
অন্যদিকে খুনের ঘটনায় জড়িত রিজু (২২) বগুড়া সোনাতলা উপজেলার মাদারীপাড়া এলাকার আজিজ প্রামাণিকের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এরা হলেন— একই এলাকার শাজাহান সরকারের ছেলে আশাদুল ইসলাম (২০) এবং গাবতলী উপজেলার একবাড়িয়া এলাকার ফটু মিয়ার ছেলে শাবলু মিয়া সরকার (৪০)।
সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-৭ এর একটি দল একাধিক অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি রিজুকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিজু স্বীকার করেছেন, সাতদিন আগের পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি এবং তার এক সহযোগী মিলে বিজয়কে ছুরিকাঘাত এবং পেরেক দিয়ে জখমের মাধ্যমে হত্যা করেন। হত্যার পর বিজয়ের ভ্যান তারা আশাদুল ও শাবলু মিয়ার কাছে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। পরে সেই ভ্যান খণ্ড খণ্ড অবস্থায় উদ্ধার করে র্যাব।