‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ সুফি মিজানের বিচার চেয়ে চট্টগ্রামে ছাত্রদের বিক্ষোভ

ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে অর্থায়নের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চট্টগ্রামভিত্তিক পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান ‘সুফি’ মিজানুর রহমানের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ‘সুফি’ মিজানের বিচার দাবি করেন তারা।

বুধবার (৭ মে) বিকাল চারটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানে প্রেস ক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াড’।

এ সময় তারা ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন বানচালে অর্থ যোগানদাতা, সুন্নি-জনতার নামে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের নেপথ্য কারিগর সুফী মিজানুর রহমানের মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় বিচার চাই’ সংবলিত ব্যানার হাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

বিক্ষোভ কর্মসূচীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সদস্য সচিব রিয়াজ মোহাম্মদ সাকিব, সংগঠক শাহরিয়ার সিকদার, এহসানুল হক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার মুখ্য সংগঠক প্রান্ত বড়ুয়াসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে অর্থায়নের অভিযোগে চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান ‘সুফি’ মিজানুর রহমানসহ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ২০১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে একটি মামলা হয়েছে। গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে একই দিন বিকাল তিনটার দিকে মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ‘সুন্নি-জনতা’।

এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াডের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর সুফি মিজানকে সামনে রেখে ‘সুন্নি-জনতা’ আড়ালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে।’

এদিকে বুধবার (৭ মে) বিকালে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা নগরীর চেরাগী মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। যানজট নিরসনের জন্য উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। এর কিছুক্ষণ পর সড়ক ছেড়ে পাশে অবস্থান নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী শ্লোগান দিতে থাকে তারা। এ সময় ক্রমেই ছাত্রজনতার ভিড় বাড়তে থাকলে সুফি মিজানুর রহমানের অনুসারীরা স্থান ছেড়ে অন্যত্র সরে পড়ে।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াডের সদস্যরা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পরও আমাদের দেখতে হচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বাচাঁতে সুবিধাবাদী কেউ কেউ মাঠে নামে। যে ফ্যাসিবাদের দোসর ছাত্রদের মারার জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছিল, প্রেসক্লাবের মত জায়গায় তার পক্ষে কিভাবে মানববন্ধন হয়? আমাদের প্রশাসন কী করছে? যারা বিভিন্ন গোষ্ঠীর নাম ভাঙিয়ে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করবে, আমরা তাদের রুখে দেবো।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সদস্য সচিব রিয়াজ মোহাম্মদ সাকিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় সামনের সারিতে কাজ করব। আজ যে ফ্যাসিবাদের দোসর সুফী মিজানুর রহমানের মামলা নামানোর পক্ষে, সুন্নিয়তের নাম দিয়ে যারা আন্দোলন করছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলাম। ভবিষ্যতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেবো।’