ফেসবুকে পরকীয়া, চট্টগ্রামের গৃহবধূ নিয়ে পালিয়ে লাশ হলেন ঢাকার যুবক
বিয়ে না করেই ঘোরাচ্ছিলেন বছরখানেক ধরে
ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ঢাকার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন চট্টগ্রামের এক গৃহবধূ। এর একপর্যায়ে প্রবাসী স্বামীর ঘর ছেড়ে সেই যুবকের হাত ধরে পালিয়ে যান ওই গৃহবধূ। প্রায় একবছর পর সেই যুবকের লাশ মিলল গৃহবধূর ভাড়া বাসা থেকে। তবে তখন বাসায় ছিলেন না গৃহবধূ।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিকাল ৫টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নের মুনিয়াপুকুর পাড় এলাকার এনায়েতপুর বাজারে দিদারুল আলম নামে এক ব্যক্তির মার্কেটের তৃতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে পুলিশ ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে।
সবুজ বিশ্বাস (২৬) নামের ওই যুবক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে বছরখানেক আগে একটি বেসরকারি ব্যাংকে যোগ দেন। তার স্থায়ী ঠিকানা খুলনার তেরোখাদা উপজেলার বারাসাত ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পূর্ব কাটেংগা হলেও তার পরিবারের বসবাস ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খিলগাঁও সি-ব্লকে। তার পিতার নাম আবদুল হান্নান বিশ্বাস।
অন্যদিকে ওই গৃহবধূর বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা নোয়াজিশপুরে।
এদিকে সবুজের স্ত্রী ওই গৃহবধূ জানান, ১১ মাস আগে তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় ফেসবুকে সবুজ বিশ্বাসের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এর সূত্র ধরে তারা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস পেয়ে তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে ৭ বছর ও ৩ বছর বয়সী দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে সবুজের সঙ্গে একত্রে সংসার শুরু করেন। এর মধ্যে গত ২৮ জুন তার দ্বিতীয় স্বামী সবুজ তাকে ঢাকা থেকে হাটহাজারীর মুনিয়া পুকুরপাড় এলাকায় নিয়ে এসে একটি ভাড়া বাসায় উঠেন।
ওই গৃহবধূ জানান, কিছুদিন ধরে নিকাহনামা নিবন্ধন করা নিয়ে সবুজের সঙ্গে তার ঝগড়া চলে আসছিল। এর মধ্যে গত ২৯ জুলাই তিনি কলহের জের ধরে তার এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। পরে সোমবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সবুজের অনুরোধে তাদের ভাড়া বাসায় স্থানীয় এলাকাবাসী আবদুর রহিম, মো. নাছির ও তার খালাতো বোনকে নিয়ে একটি সমঝোতা বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে সবুজ প্রতিশ্রুতি দেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে তিনি নিকাহনামা বুঝিয়ে দেবেন।
গৃহবধূ জানান, এমন সিদ্ধান্ত হওয়ার পর তিনি তার আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। ওই সময় তার স্বামী বাসায় একা ছিলেন। পরে মঙ্গলবার তিনি জানতে পারেন তার স্বামী গলায় মাফলার দিয়ে পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে তাদের ভাড়া বাসার রান্নাঘরে আত্মহত্যা করেছেন।
তবে নিহত সবুজের ঢাকায় অবস্থানরত স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, সবুজকে হত্যা করা হয়েছে। তারা হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন জানিয়েছেন।
এদিকে হাটহাজারী থানার পুলিশ জানিয়েছে, সবুজের গলায় ফাঁস ও বাম চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।