ফেসবুকে খবর শেয়ার করে কর্তৃপক্ষের কোপানলে চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মী

চট্টগ্রাম বন্দরে মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে দুর্নীতির একটি প্রতিবেদন চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রকাশিত হওয়ার পর সেটি ফেসবুকে শেয়ার করায় চট্টগ্রাম বন্দরের পরিকল্পনা বিভাগের এক কর্মীর ওপর খেপেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের (সিবিএ) কার্যনির্বাহী সদস্য মেহেদী হাসান মজুমদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

ফেসবুকে খবর শেয়ারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে— এমন অভিযোগ এনে মেহেদী হাসান মজুমদারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, খবরটি শেয়ার করে তিনি বন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মাধ্যমে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। আর এজন্য মামলা ছাড়াও তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত এবং বিভাগীয় মামলা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

বর্তমানে এ সংক্রান্ত অভিযোগের ফাইলটি চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর ‘৪৪ মাইক্রোবাস ভাড়ার বিল ২১ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম বন্দরে হরিলুটের নমুনা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় চট্টগ্রাম প্রতিদিনে। এটি প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওইদিন এই প্রতিবেদনটি নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করে চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মী মেহেদী হাসান মজুমদার। এরপরই তিনি কয়েকজন সিবিএ নেতার ইন্ধনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কোপানলে পড়েন।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, চট্টগ্রাম বন্দরে মাইক্রোবাস ভাড়ার বিল নিয়ে চলছে নজিরবিহীন হরিলুট। সরকারি সমস্ত নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বিলের অর্ধেক টাকাই করা হচ্ছে লুটপাট। গত তিন বছরে ৪৪টি মাইক্রোবাস ভাড়ায় নিয়ে সেগুলোর বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২০ কোটি ৪১ লাখ ৩৫ হাজার ২৭৫ টাকা। এর মধ্যে ১০ কোটি ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ২৯৫ টাকাই পরিশোধ করা হয়েছে বাড়তি— যা অনেকটা দিনেদুপুরে ডাকাতির মতোই। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এই ভাড়া আসে মাত্র ৯ কোটি ৫০ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮০ টাকা।

জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত মোট ৪৪টি মাইক্রোবাসের জন্য ২০ কোটি ৪১ লাখ ৩৫ হাজার ২৭৫ টাকায় চুক্তি করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সরকার নির্ধারিত চট্টগ্রামের জন্য প্রতি মাসে ৬০ হাজার এবং ঢাকার জন্য প্রতি মাসে ৯০ হাজার টাকা হিসেবে তিন বছরে ভাড়া বাবদ ব্যয় হওয়ার কথা মোট ৯ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অথচ তিন বছরে পরিশোধ করা হয়েছে অতিরিক্ত আরও ১০ কোটি ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ২৭৫ টাকা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!