‘ফিল্ম স্টাইলে’ সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত, মামলা নিয়েও লুকোচুরি

সিনেমার কোন গল্প নয়। তবু দিনের বেলায় ফিল্ম স্টাইলে পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে সংখ্যালঘু করে জায়গা দখল করেছে একটি সিন্ডিকেট। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জায়গা দখলের ওই হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই নারীসহ ৩ জন।

রোববার (১ নভেম্বর) হাটহাজারীর চিকনদন্ডী ইউনিয়নের অনুকুল মাস্টারের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- রতন কুমার নাথ, তার পুত্রবধু পুতুল নাথ ও ভাতিজি মুক্তা রানী নাথ। এ হামলার ঘটনায় সদ্য প্রবাস থেকে আসা রুবেল নামে একজনকে দায়ী করছেন রতন কুমার নাথের পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, স্থানীয় আমান বাজারের পূর্বপাশে অনুকুল মাস্টারের বাড়িতে ৩ ঘর হিন্দু পরিবারের বাস। গত ১ নভেম্বর স্থানীয় রুবেলের নেতৃত্বে সাকিব, আরমান, ওসমান, মোরশেদসহ ৭/৮ জন মিলে ওই বাড়ির কিছু অংশের গাছপালা কাটতে শুরু করে। এতে বাধা দিলে রতন কুমার ও তার ভাতিজি, পূত্রবধুর উপর হামলা চালায় তারা।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) রুবেলসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে হাটহাজারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রতন কুমার নাথ। তবে বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত মামলাটি এফআইআরভুক্ত হয়েছে কীনা নিশ্চিত হতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবার। এমনকি ঘটনার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রকাশ্যে ঘুরছে হামলাকারিরা।

এদিকে, এই ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। যদিও ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের দাবি, হামলার পর পরই স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ফোন করে জানানো হয়েছে।

রতন কুমার নাথের ছেলে তপন কুমার নাথ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমরা ৩ নভেম্বর রাতে মামলা করেছি। কিন্তু এর মধ্যে হামলাকারিরা আরও দুইবার এসেছে। পরেরদিন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ থেকে মামলার নম্বর চাইলে আমরা এসআইকে ফোন দিলাম। এসআই এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার জানাতে পারবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চিকনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্থানীয় মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

স্থানীয় মেম্বার মোরশেদ বলেন, কিছু কুচক্রী মহল জায়গা দখলের জন্য এই হামলা করেছে। তবে কারা হামলা করেছে সেটা জানিনা। আমাদেরকে কেউ কিছু জানায়নি।

জনপ্রতিনিধিদের এই দাবি নাকোচ করে দিয়ে তপন কুমার নাথ বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমার বাবা ফোন করে চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন। তিনি কিছু করতে পারবেন না বলে জবাব দেন। এরপর আমরা ৯৯৯ এ কল করি।

হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে জানতে হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!