ফাঁদে ফেলে রেলকর্মীদের ৫০ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী উধাও

গোফরান উদ্দিন। বাংলাদেশ রেলওয়েতে ওয়ার্কসপের কর্মকর্তা। দীর্ঘ চাকুরী জীবন শেষ করেই অবসরে যান ২০১৭ সালে। পেনশনে পাওয়া টাকা থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা সরল বিশ্বাসে ব্যবসার জন্য চলতি বছরের শুরুতে তুলে দেন পাইকারী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসানের হাতে।

হাসান চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকায় সাকিব স্টোর নামের একটি দোকানের পাইকারী ব্যবসায়ী। বাসা সংকটের কারণে রেলের অনেক কর্মচারী বসবাস করে ওই এলাকায়। রেল কর্মচারীসহ আকবর শাহ এলাকার মানুষের কাছে হাসান নিজেকে সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত করতে নানা কৌশলে ফাঁদ বানায়। আর তার পাতানো ফাঁদেই আটকে পড়েন গোফরান উদ্দিনের মতো রেল কর্মচারী মনির আহমেদসহ আরও তিনজন। ব্যবসার মাধ্যমে লাভের আশায় তারাও জীবনের শেষ সম্বলটুকু হাসানের হাতে তুলে দেন। রেলওয়ে অবসরে যাওয়া এই পাঁচ কর্মচারীর ১৩ লক্ষ টাকা নিয়ে হঠাৎ লাপাত্তা হয়ে যায় প্রতারক হাসান। তার খোঁজ না পেয়ে সম্বলহীন রেলের অবসরে যাওয়া এই পাঁচ কর্মচারী এখন পথে পথে ঘুরছে।

রেলওয়ের এসব কর্মচারীদের মতোই হাসানের প্রতারণা ফাঁদে পড়ে এখন দিশেহারা আকবর শাহ থানা এলাকার আরও ২০-২৫ জন। এদের কারও থেকে সাত লাখ, কারও থেকে পাঁচ লাখ আর কারো লাখ টাকা—সব মিলিয়ে অর্ধকোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে হাসান এখন লাপাত্তা। বড় বড় তালা ঝুলছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাকিব স্টোরে।

প্রতারণার শিকার এসব ভুক্তভোগীর মধ্যে মনিরুজ্জামান নামক একজন ২০ অক্টোবর আকবর শাহ থানায় মামলা করেন প্রতারক হাসানের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত মো. হাসান কুমিল্লার তিতাস থানার হরিপুর সানাউল্লাহ বাড়ির আকবর আলীর ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) আকবরশাহ থানার রেল হাউজিং এলাকার বাসিন্দা পাঁচ ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, তারা রেলের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর একটু ভালোভাবে চলতে ব্যবসায় জন্য হাসানের হাতে ১৩ লাখ টাকা তুলে দেন। টাকা বিনিয়োগের পর লভ্যাংশ পায়নি তারা। পাঁচ ভুক্তভোগীর ১৩ লাখ টাকা ছাড়াও প্রতারক হাসান আরও বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

মুস্তাফিজুর রহমান নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, শুধু অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী নয়, প্রতারক হাসান এলাকার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে আরও অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এদের মধ্যে আকবরশাহ হাউজিং সোসাইটি এলাকার শাহাদাতের কাছ থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা, মনিরুজ্জামানের ছয় লাখ টাকা, শিপুর ৫ লাখ টাকাসহ আরও অনেকের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।

অভিযুক্ত হাসানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে আকবরশাহ থানা সূত্রে জানা গেছে।

এএইচ/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm