চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের পরিচয় মেলেনি। ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটেছে যেখানে, সেই কোটবাড়িয়ার কোনো লোকও হদিস দিতে পারছে না লাশের পরিচয় কী? যদিও র্যাব বলছে গোপন সংবাদে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ওই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। লাশটি বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন হলেও ওই নাম-পরিচয়হীন ব্যক্তির বিরুদ্ধেই হয়েছে তিন মামলা।
স্থানীয়রা বলছেন, এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা নিহত ব্যক্তি সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না। এলাকায় এমন ঘটনার কোন তথ্যও তারা পাননি।
এদিকে র্যাবের সঙ্গে ‘কথিত বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ৬ দিনেও এখনও নিহতের সম্পর্কে কোন তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ভোরে ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার কোটবাড়িয়া গ্রামের শিকদারপাড়া এলাকায় র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। র্যাব ওই ব্যক্তিকে অস্ত্র ব্যবসায়ী সন্দেহ করলেও তার সম্পর্কে এ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারেনি।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মো. মাশকুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একটি দল ভূজপুর থানার কোটবাড়িয়া গ্রামে অবস্থান করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের টহল টিম ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে একজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহসহ একটি একে-২২ অস্ত্র ও ৬৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া আলামত ও অস্ত্র দেখে মনে হয়েছে নিহত ব্যক্তি অস্ত্র ব্যবসায়ীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’
ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধের পর আমরা লাশ উদ্ধার করেছি। আমরাও নিহতের পরিচয় এখনও পাইনি। নিহত যুবকের পরিচয় উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমেও আমরা পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করছি।’
শুক্রবার চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে লাশ দাফন করা হয়।
তিনি জানান, নিহত যুবকের বিরুদ্ধে ৩ মামলা হয়েছে। তার বিভিন্ন অভিযোগে অস্ত্র মামলা, ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকায় আগে কখনো অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কারবার সম্পর্কে শোনা যায়নি। যে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে সেও কারো পরিচিত নয়। হঠাৎ এলাকায় এমন ঘটনার কারণও কেউ জানে না। এটি সাজানো ঘটনা হতে পারে বলে এলাকাবাসীর বেশিরভাগেরই ধারণা।
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এসএস