ফটিকছড়ির পৌরসভা সড়কের বেহাল দশা, ঝাঁকুনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন রিকশাযাত্রী
স্থানীয় বাসিন্দাদের মানববন্ধন, ইউএনওর আশ্বাস
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভা উত্তর ধুরুং ৮ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খালের পূর্ব পাড়ের রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক ও কর্মজীবী মানুষদের। রিকশা যাত্রী উঠলে তারা অসুস্থ হয়ে যান ঝাঁকুনি খেয়ে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে চলাচল একেবারেই দুরূহ হয়ে পড়ে। এর আগে এলাকাবাসীর উদ্যেগে বার বার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু সরকার বা পৌরসভার পক্ষ থেকে সংস্কার কাজে হাত দেওয়া হয়নি। অথচ এ সড়ক ব্যবহার করে ফটিকছড়ি থেকে কাঞ্চননগর ইউনিয়নে যাতায়াত হয়।
সড়ক সংস্কারের দাবিতে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ির সড়কের বিবিরহাট বাস স্টেশনের এ মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মানববন্ধনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক সড়কের উন্নয়ন কাজের আশ্বাস দেন।
স্থানীয়রা বাসিন্দারা জানান, এই রাস্তাটি এলাকার সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক ও কর্মজীবী মানুষদের। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে চলাচল একেবারেই দুরূহ হয়ে পড়ে। এর আগে এলাকাবাসীর উদ্যেগে বার বার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু সরকার বা পৌরসভার পক্ষ থেকে সংস্কার কাজে হাত দেওয়া হয়নি। অথচ এ সড়ক ব্যবহার করে ফটিকছড়ি থেকে কাঞ্চননগর ইউনিয়নে যাতায়ত হয়। এখন পৌরসভা এলাকা পর্যন্ত সংস্কার করা হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হতো।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা সদর বিবিরহাট বাজার থেকে উত্তর ধুরুং ৯ নং ওয়ার্ডে যাওয়া সড়কটিতে মরক ধরেছে। রাস্তার মাঝখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিক সলিং উঠে পায়ে হাঁটাও যাচ্ছে না। রিকশা যাত্রী উঠলে তারা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন ঝাঁকুনিতে। বোরহান উদ্দিন শাহ মাজার গেইট থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক দিয়ে গাড়ি চলা দুরে থাক পায়ে হাঁটাও যায় না। অথচ দেশের অলিগলি উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু সরকারের নজর পড়ে না উপজেলার পাশে এ গ্রামে।
এদিকে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বহুবার কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানালেও এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই এলাকাবাসী তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধনে দাঁড়াতে হয়েছে।
মাস্টার শহীদুল আলম বলেন, দূরের কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না এ গ্রামের মানুষের সঙ্গে। কারণ ঘরবাড়ি দেখতে এসে যখন সড়ক দেখে তখন তারা আগ্রহ দেখায় না। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।
ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বলেন, অনেক জনপ্রতিনিধিকে আমরা অতীতে জয়যুক্ত করেছি। কিন্তু তারা আমাদের রাস্তার উন্নয়ন না করে এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
মাস্টার রাশেদুল আলম বলেন, আমরা আর প্রতিশ্রুতি চাই না। এবার বাস্তবায়ন চাই।
ফটিকছড়ি পৌরসভা বিএনপি নেতা আবদুল মাবুদ মুন্সি বলেন, উপজেলার সদরে অবহেলিত গ্রাম উত্তর ধুরুং। একটি মাত্র সড়ক উন্নয়ন হলেই এলাকাবাসীর দুঃখ চলে যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন আশ্বাস পেয়েছি উন্নয়ন পায়নি। তাই আমরা সড়কে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি। এবার অল্প সময়ের মধ্যে বরাদ্ধ না হলে এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যাবো।
৮ ও ৯ ওয়ার্ড রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক মামুনের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফটিকছড়ি প্রেস ক্লাব সভাপতি সৈয়দ মাসুদ, ব্যবসায়ী সেলিম উদ্দিন, মোহাম্মদ শাহজাহান, মহিন উদ্দিন, জোবায়ের হোসেন বাবু, তারেকুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, আবু তালেব, আনোয়ার হোসেন।
ওই মানববন্ধনে ফটিকছড়ির ইউএনও মোজাম্মেল হক উপস্তিত হয়ে উত্তর ধুরুং রাস্তাটিতে প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ সড়কের উন্নয়ন শুরু হবে বলে জানান তিনি।
ডিজে