প্রোটিয়াদের কাছে হেরে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে নেমে গেছে অস্ট্রেলিয়া। সেই সাথে বাংলাদেশকে আটে নামিয়ে দিয়ে সপ্তম স্থান দখল করলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের সাত নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেদের এই সপ্তম স্থানটিও ধরে রাখতে পারল না টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েও বিশ্বকাপ শুরু করলেও, শেষতক অষ্টম হয়েই শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ।
বাংলাদেশ আট নম্বরে নামানোর কৃতিত্বটাও অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকারই। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে টেবিল টপার অস্ট্রেলিয়াকে ১০ রানে হারিয়ে তারা উঠে গেছে সাত নম্বরে, অস্ট্রেলিয়াকে নামিয়ে দিয়েছে দুই নম্বরে এবং বাংলাদেশকেও পাঠিয়েছে আট নম্বরে।
নিজেদের নয় ম্যাচ শেষে ৩ জয় ও ১ পরিত্যক্ত ম্যাচের কল্যাণে ৭ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানেই ছিলো বাংলাদেশ। সমান ম্যাচে সমান জয় ও পরিত্যক্ত ম্যাচে সমান ৭ পয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকারও। কিন্তু নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় সপ্তম হলো প্রোটিয়ারা, বাংলাদেশ নেমে গেল আট নম্বরে।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান থেকে দুইয়ে নেমে গেছে অস্ট্রেলিয়া। কারণ ৯ ম্যাচ শেষে ৭ জয় ও ২ পরাজয়ে তাদের ঝুলিতে রয়েছে ১৪ পয়েন্ট। অন্যদিকে সমান ম্যাচে ৭ জয় ও ১ পরিত্যক্ত ম্যাচের কল্যাণে ভারতের রয়েছে ১৫ পয়েন্ট।
ফলে এক নম্বর দল হয়েই সেমিফাইনালে গেল ভারত। শেষ চারে তাদের প্রতিপক্ষ হবে নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে দ্বিতীয় হয়ে সেমিতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে খেলতে হবে তিন নম্বরে থেকে শেষ চারে যাওয়া স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আগে ব্যাট করে অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের সেঞ্চুরি ও ফন ডার ডুসেনের ৯৫ রানের ইনিংসে ভর করে দাঁড় করিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ৩২৫ রানের বড় সংগ্রহ। জবাবে ডেভিড ওয়ার্নার সেঞ্চুরি ও অ্যালেক্স ক্যারে ৮৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললেও ৩১৫ রানে অলআউট হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। দশ রানের দারুণ এক জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ৩৩ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান অ্যারন ফিঞ্চ (৩) ও স্টিভেন স্মিথ (৭)। এর মধ্যে ২০ রানের সময় উসমান খাজা ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়ায় তখন কার্যত ৩ উইকেট ছিলো অস্ট্রেলিয়ার।
তৃতীয় উইকেটে মার্কস স্টয়নিসকে নিয়ে ৬২ রান যোগ করেন ডেভিড ওয়ার্নার। স্টয়নিস ফেরেন ২২ রান করে। ব্যর্থ হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আউট হন ১২ রান করে।
তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান ডেভিড ওয়ার্নার ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারে। দুজনের জুটিতে আসে ১০৮ রান। চলতি বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরিতে ১২২ রান আউট হন ওয়ার্নার।
তখনো আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ক্যারে। কিন্তু ২৭৫ রানের মাথায় ক্যারে ৬৯ বলে ৮৫ রান করে আউট হয়ে গেলে কার্যত আশা শেষ অসিদের। তবে মিচেল স্টার্ক ১১ বলে ১৬ ও জেসন বেহরেনডর্ফ ৬ বলে ১১ রান করে পরাজয়ের ব্যবধানটা কমিয়ে আনেন।
শেষপর্যন্ত ১ বল বাকি থাকতে ৩১৫ রানে অলআউট হয়ে অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে বল হাতে ৩ উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। এছাড়া ২টি করে উইকেট শিকার করেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ও আন্দিল ফেলুকায়ো।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের তুলোধুনো করে একটা সময় ২ উইকেটেই ২৬৫ রান তুলে ফেলে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের তখন ৪৩ ওভার। শেষ ৭ ওভারে বেশ কয়েকটি উইকেট হারালেও ৬০ রান যোগ করেছে ফাফ ডু প্লেসিসের দল।
ডু প্লেসিস ৯৪ বলে ৭ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় কাটায় কাটায় ১০০ করে আউট হন। ৯৭ বলে ৪টি করে চার ছক্কায় ৯৫ রান করেন ফন ডার ডাসেন। এছাড়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক ৫২ আর এইডেন মার্করাম করেন ৩৪ রান।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক আর নাথান লিয়ন।