প্রাইমারি পাস ‘প্রতিভাবান ডাক্তার’ আবার ধরা পুলিশের হাতে

বড় বড় সব ডিগ্রিই আছে সাইনবোর্ডে

প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডিও পেরোননি। কিন্তু তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে বড় বড় ডিগ্রি— এমবিবিএস পিজিটি, মেডিসিন, সার্জারি, জেনারেল ফিজিসিয়ান। এমন ‘প্রতিভাবান ডাক্তার’ ডিগ্রিভরা সাইনবোর্ড লাগিয়ে রোগী দেখে আসছিলেন। নাম তার জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)। আগেও পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন এই জোচ্চুরি করতে গিয়ে। জেল থেকে বেরিয়ে আবার সেই জোচ্চুরিতে নেমে পড়েন। তবে এবার আর শেষ রক্ষা হল না তার।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া পথেরহাটস্থ স্কুল মার্কেটের চেম্বার থেকে জাহাঙ্গীর আলম নামের এই ভুয়া ডাক্তারকে আটক করে পুলিশ। এর আগেও ২০১৫ সালেও তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। আটক জাহাঙ্গীর রাউজান উপজেলা নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল কাশেম ওরফে মেরুর ছেলে।

জেলা পুলিশের রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, আটক জাহাঙ্গীর আলম এর আগেও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। বরাবরের মত এবারও সে জামিনে বেরিয়ে এসে ভূয়া ডিগ্রি নামের পাশে লাগিয়ে রোগী দেখে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও অপচিকিৎসা করে আসা জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

প্রাইমারি পাস ‘প্রতিভাবান ডাক্তার’ আবার ধরা পুলিশের হাতে 1

রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, এর আগে চিকিৎসক পরিচয়ে প্রতারণা করায় জাহাঙ্গীর আলমকে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। জেল থেকে বের হয়ে আবারও চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ১২ আগস্ট রাউজান উপজেলার তৎকালিন নির্বাহী কর্মকর্তা কুলপ্রদীপ চাকমা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। তিন মাস জেল খাটার পর তিনি জামিনে বেরিয়ে এসে আবার ‘ডাক্তারি’ শুরু করেন।

জানা গেছে, এর আগেও এই ভুয়া ডাক্তার জাহাঙ্গীরকে তিন তিনবার গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট ডাক্তার পরিচয়ধারী জাহাঙ্গীরের প্রেসক্রিপশনে ভুল চিকিৎসা এবং ভুল ওষুধ দেওয়ার বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে।

ঘটনার দিন অন্ডকোষে একটা ফোঁড়া নিয়ে তার কাছে গেলে তিনি এটাকে হার্নিয়া রোগ হিসেবে শনাক্ত করেন। এই হিসেবে কতগুলো ওষুধও লিখে দেন। যা পরে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখালে তা ভুল প্রমাণিত হয়।

আইএমই/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!