প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চট্টগ্রামের কলসি বাড়ি সংরক্ষিত হচ্ছে প্রত্নসম্পদ হিসেবে

চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ৩০০ বছরের পুরনো সেই বাড়িটি প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত বাড়িটিকে ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘরটি যে অবস্থায় আছে সেভাবেই সংরক্ষণ করা হবে।

শনিবার (১০ জুলাই) বাড়িটি পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, ঘরটি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ প্রক্রিয়া শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা নজুমিয়া লেইনে কিছু ‘মাটির মটকা’র ওপর ৩০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে ছিল হাজার বর্গফুটের দোতলা ভবন। বিস্ময়কর হচ্ছে, মটকার ওপর ২২ ইঞ্চি ইট-সুরকির আস্তর ছিল। মটকা হচ্ছে মাটি থেকে তৈরি করা একপ্রকার বিশালাকৃতির পাত্র, যা দেখতে অনেকটা কলসের মতো মনে হয়। ওই ভবনটির দেয়ালও ২২ ইঞ্চি পুরু। ঘরের মাঝখানে কুয়া। সেই কুয়াতে এখনও রয়েছে বিশুদ্ধ পানির ধারা।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চট্টগ্রামের কলসি বাড়ি সংরক্ষিত হচ্ছে প্রত্নসম্পদ হিসেবে 1

চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ী বক্সিরহাটের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তুল্লাহ সওদাগর প্রায় ৩০০ বছর আগে ১৭ শতাব্দীতে এই ভবনটি নির্মাণ করেন। তার দুটি সরের জাহাজ ছিল। যা দিয়ে রেঙ্গুনের সাথে ব্যবসা করতেন। রেঙ্গুন (ইয়াঙ্গুন) থেকে ‘মাটির মটকা’ বা কলসি এনে সেই সময়ের ২৫ হাজার টাকায় ভবনটি তৈরি করেন বলে শরিয়ত উল্লাহর চতুর্থ প্রজন্ম মোহাম্মদ আবুল মনসুর।

গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে চুয়েটের সাবেক ভিসি ও চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম ভবনটি পরিদর্শন করে বলেন, ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে এই মাটির মটকা পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ৩০০ বছর ধরে হাজার টন ওজনের একটি ভবন কিভাবে মাটির মটকার ওপর ধারণ করে আছে সেটি পরীক্ষা ও গবেষণা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এর পর চট্টগ্রাম জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের সহকারী পরিচালক ড. আহমেদ আব্দুল্লাহ বাড়িটি পরিদর্শন করেন সার্বিক বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন। এ সময় তিনি বলেন, মোগল আমলের শেষ দিকের এই স্থাপনাটি ৩০০ বছরের পুরানো— এটা সঠিক। কলসির ওপর নির্মিত ভবন চট্টগ্রামে এই প্রথম আবিষ্কৃত হল। এ ধরনের ঐতিহাসিক স্থাপনা প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি।

পরবর্তীতে সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষও ঐতিহাসিক ভবনটি পরিদর্শন করেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!