প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সাজতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম নগর। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করছে। কিন্তু এসব সৌন্দর্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে পোস্টার-ব্যানারের ভিড়ে। নেত্রী আসবেন, তাই চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা পোস্টার-ব্যানার টাঙাচ্ছেন। আর এতেই এসব ব্যানার-পোস্টারের কারণে বিবর্ণ হয়ে পড়ছে নগরীর সুন্দর রূপ। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব পোস্টার সরাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলেও জানান সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, টাইগারপাস, সিটি কর্পোরেশনের প্রবেশপথ, লালখানবাজার, আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার ছেয়ে গেছে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ফেস্টুন-ব্যানারে। এসব এলাকায় চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও।
সিটি কর্পোরেশন অফিসে যাওয়ার প্রবেশমুখে ফলকের আশপাশে ব্যানার লাগিয়েছে বিভিন্ন নেতাকর্মীরা। এছাড়া রাস্তার আশপাশে বাঁশের খুঁটি বসিয়েও লাগানো হয়েছে বিশাল আকৃতির ব্যানার। টাইগারপাস মোড়ে বসানো ঘড়ির সৌন্দর্যও মলিন হয়েছে আশপাশে লাগানো বিভিন্ন ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে। সেই ঘড়ির ওপরে বেলুন বসিয়ে তাতেও লাগোনো হয়েছে পোস্টার। টাইগারপাসের রোড ডিভাইডারে লাগানো হচ্ছে ফুলের গাছ। কিন্তু এসব ব্যানার-পোস্টারের ভিড়ে সেসব ফুল গাছ দেখাই যাচ্ছে না।
এছাড়া ফ্লাইওভারের ডিভাইডারগুলোতে রং করা হলেও তার ওপর বিভিন্ন নেতাকর্মীরা পোস্টা সাঁটিয়ে দিয়েছে। এতে নতুন রং করা এসব ডিভাইডারের সৌন্দর্য চোখে পড়ছে না। একইসঙ্গে ফ্লাইওভারের ওপরেও বাঁশের খুঁটি বসিয়ে লাগানো হয়েছে ব্যানার। ফ্লাইওভারের সৌন্দর্য বাড়াতে নৌকার আদলে ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হয়েছে বাতি।
নগরীর সিআরবি এলাকায় রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে নতুন কার্পেটিং। এছাড়া রেলওয়ে দপ্তরের আশপাশে বাউন্ডারি গ্রিলেও লাগানো হচ্ছে নতুন রং।
সিটি কর্পোরেশনের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মচারী জানান, ব্যানার-পোস্টার সরাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে আমাদের।
এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি কর্পোরেশনের এক কর্মচারী বলেন, ‘নেতাকর্মীদের ব্যানার সরাতে গেলে তারা বলেন, একটি ব্যানার করতে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, টাকাগুলো তোর বাপ দেবে?’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি কর্পোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব নেতাকর্মীদের কারণে কোনোভাবে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা যাচ্ছে না। দিনে করলে এসব সৌন্দর্য রাতে নষ্ট হচ্ছে। প্রধান প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ কেটে দেন।
আগামী ৪ ডিসেম্বর নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে যোগ দিতে প্রায় এক দশক পর চট্টগ্রাম আসছেন প্রধানমন্ত্রী।
ডিজে