পেকুয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার কেবল নামেই!

কক্সবাজারের পেকুয়ায় শুধু নামেমাত্র চালু রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। গত ২০ দিন আগে চালু করা এ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে সম্প্রতি অন্য জেলা থেকে পেকুয়ায় ফিরে আসা প্রায় অর্ধশত মানুষের মধ্যে একজনকেও রাখতে পারেনি। পুরো উপজেলা এখন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে। উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা ও অব্যবস্থাপনাকে দুষছেন অনেকেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেকুয়া উপজেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের প্রবেশপথ ও ভবনে ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের জন্য নির্ধারিত স্থান’ ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত ভবনের মূল ফটক তালা দেওয়া। এ ভবনে লাল রঙের দুটি ব্যানার ছাড়া আর কিছুই নেই। অনেক হাকডাক করেও ভবনের আশেপাশেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে রিপোর্টার্স ইউনিটি পেকুয়ার সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পেকুয়া উপজেলার প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে এই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার চালু করার কথা ছিল। পেকুয়া উপজেলায় বাইরে থেকে কেউ এলে, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের মাধ্যমে পরিবার-সমাজ থেকে আলাদা রেখে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করা ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার চালু করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এর মাশুল পেকুয়া উপজেলার মানুষদের খুব কঠিনভাবে দিতে হবে। অবকাঠামোগত সকল সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পানি সরবরাহের অভাবে পেকুয়া ক্রীড়া কমপ্লেক্স ভবনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরিণত করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। পানি সরবরাহের একটি ইলেক্ট্রিক মোটরের দাম কি মানুষের জীবনের ঝুঁকির চাইতে বেশি?’

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘উপযুক্ত স্থান হিসেবে উপজেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বানানো হয়। কিন্তু সেখানে শুধুমাত্র পানি সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায়, আজ অবধি কাউকে রাখা সম্ভব হয়নি। অথচ সর্বোচ্চ সংক্রমিত এলাকা নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন নিয়মিত পেকুয়ায় ফিরে আসছে। তাদের কোনভাবেই আমরা কমিউনিটির বাইরে রাখতে পারছি না৷ তাই পেকুয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি প্রবল।’

পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম বলেন, ‘সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও নানা পন্থায় লোকজন নিজের এলাকায় ফিরছে। তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে, আমরা তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় আমরা যাদের চিহ্নিত করতে পেরেছি, তাদের হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে বাধ্য করছি। কিন্তু তারা পরিবারের সদস্যদের সাথে মেলামেশা করছে। সেটি তো ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটি চালু রাখা গেলে, সম্প্রতি পেকুয়ায় ফিরে আসা মানুষদের মূল জনস্রোত থেকে আলাদা রাখা সহজ হতো ‘

এ ব্যাপারে জানতে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদাতের সরকারি মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি পেকুয়ায় ফিরে আসা ২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!