পুলিশের ‘আদরে’ রেলে গভীর রাতে যেভাবে চুরি হয় লাখ লাখ টাকার মালামাল (ভিডিও)

বাংলা সিনেমার কোন দৃশ্য নয়। চোরের দল বুক ফুলিয়ে চুরি করছে রেলের লাখ লাখ টাকার যন্ত্রাংশ। অথচ এসব যন্ত্রাংশ পাহারায় রয়েছে রেল নিরাপত্তা বাহিনী। চোর আর রেল পুলিশ যেন ভাই ভাই। চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে আসা সিসিটিভি ফুটেজেই দেখা গেল তেমন ঘটনাই।

YouTube video

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল রিপেয়ার (জিইআর) শপে দুই দিনে প্রায় তিন লাখ টাকার যন্ত্রাংশ (পাওয়ার কার) চুরি হয়ে গেছে। অভিযোগ মিলেছে, গভীর রাতে এসব যন্ত্রাংশ চুরি করে বুক ফুলিয়ে নিয়ে যেতে চোরদের সহায়তা করেছে খোদ রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কতিপয় সদস্য। রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত— এমন তথ্য জানার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছেন রেলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। এমনকি চুরির ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এই প্রতিবেদককে ঘটনাস্থলে যেতে বাধাও দেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

মঙ্গলবার ও বুধবার (২৫ ও ২৬ অক্টোবর) এমন অভিনব চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে ২৬ অক্টোবর চোরদের প্রবেশ ও বের হওয়ার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে এর আগের দিনের সিসিটিভি ফুটেজ ক্যামেরার রেকর্ডে আসেনি।

চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাহাড়তলী জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল রিপেয়ার (জিইআর) শপের কর্মকর্তা আশিকুর রহমান।

জানা গেছে, পার্টস সংযোজন করতে ইঞ্জিনের পাওয়ার কার (৬৩০৪ ও ৬৩০৭) দুটি আনা হয়েছিল।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২৬ অক্টোবর রাত চারটা তিন মিনিটে জিইআর শপে চোর ঢোকে। তারা বের হয় পাঁচটা ছয় মিনিটে। চোরের দল ট্রেনের গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন পাওয়ার কারটির জানালা দিয়ে প্রবেশ করে মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যায়। অথচ পাওয়ার কারের মাত্র ২০-২৫ হাত দূরে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি। ওই সময় প্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন ইয়াকুব আলী ও শাহিন ফরাজী। একঘণ্টা ধরে চোরের দল মূল্যবান পার্টস খোলার কাজ চালিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে এমন চুরির দৃশ্য ‘দেখতে পাননি’ দায়িত্বরতরা। তবে দুই দিনের চুরির ঘটনায় শামসুদ্দিন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, গত ২৫ অক্টোবর অফিস শেষে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাবিলদারকে ওই পাওয়ার কারের বিবরণ সহকারে এসএসএই আশিকুর রহমান লিখিতভাবে জানিয়ে অফিস কপি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেন। তবে আরএনবি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।

এই বিষয়ে পাহাড়তলী জেনারেল ইলেক্ট্রিক্যাল রিপেয়ার (জিইআর) শপ সহকারী প্রকৌশলী শেখ ফরিদ আহমেদ (এইই) বলেন, রেলের গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ না থাকলে এ চুরির কারণে শাস্তি পেতো নিরীহ রেল কর্মচারীরা। আল্লাহর রহমতে চুরির বিষয়টি ধরা পড়ায় অনেক নিরীহ লোক রক্ষা পেয়েছে।

এই বিষয়ে জানার জন্য রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) চিফ কমান্ডেন্ট জহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি।

এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm