পাহাড়তলীর শাপলা আবাসিকে কে ছড়ালো করোনার বীজ?

দুই রোগীই একই পরিবারের, দুজনই গৃহিণী

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর শাপলা আবাসিক এলাকায় শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) যে নারীটি করোনা পজেটিভ হিসেবে শনাক্ত হলেন, তিনি ওই এলাকায় শনাক্ত হওয়া আগের করোনা পজেটিভ রোগীর ভাইয়ের স্ত্রী। স্বামীসহ অসুস্থ ননদকে দেখতে গিয়ে ওই বাসায় লকডাউনে পড়ে যান তিনি।

১২ দিন পর ওই পরিবারের মোট ৯ সদস্যের নমুনা পরীক্ষার পর জানা গেল একমাত্র তিনিই করোনা পজেটিভ।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যে কালকের (১৭ এপ্রিল) আক্রান্ত নারীর বয়স ২৫ বলা হলেও আক্রান্তের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেল তার প্রকৃত বয়স ৩৫। তিনি পেশায় একজন গৃহিণী। যে ননদ থেকে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে তিনিও গৃহিণী।

দুজনের কারোরই বাইরে বের হওয়া হয় না। অন্যদিকে এই পরিবারের বাকি ৮ জন সদস্যের করোনা পরীক্ষা করেও কারও মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে প্রথম যিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন সেই নারীর স্বামী চাকরি করেন চট্টগ্রামের সেন্টমার্টিন হোটেলে। তাদের ২২ বছর বয়সী এক মেয়ে চাকরি করেন সাগরিকার একটি গার্মেন্টে, আরেক মেয়ে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাকিদের মধ্যে প্রথম আক্রান্ত রোগীর এক বোন, বোনের মেয়ে, ভাই ও ভাইয়ের ছেলে এখন ওই পরিবারের সাথে আছে। তবে এদের কারও মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি বিআইটিআইডির পরীক্ষায়।

শুরুর দিকে গার্মেন্টে চাকরিজীবি মেয়ে অথবা সেন্টমার্টিনে হোটেলের চাকরিজীবি স্বামীর যেকোন একজনের মাধ্যমে ওই নারী সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হলেও শুক্রবারের (১৭ এপ্রিল) পরীক্ষায় তাদের করোনা নেগেটিভ আসায় সে সমীকরণ বাতিল হয়ে গেল।

এখন প্রশ্ন হলো তাহলে কিভাবে এই দুই নারী সংক্রমিত হলেন? এই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কোনভাবেই। করোনা ভাইরাস ইস্যুতে এই উত্তর খোঁজার খুব একটা গরজও অবশ্য দেখা যায়নি সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

এই একই প্রশ্ন আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদেরও। তবে এই প্রশ্নের চেয়ে তাদের আপাতত সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে খাবারের সমস্যা। লকডাউনে থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীর গার্মেন্ট কর্মী মেয়েটি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আজ ১১ দিন ধরে আমরা লকডাউনে। আমাদের খাবার শেষ। প্রথম দিকে অনেকে কিছু কিছু খাবার পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমাদের এখানে তো অনেক পরিবার। আমরা সবাই ভাগাভাগি করে নিয়েছি ওসব। এখন অনেক কিছুই নেই আমাদের। চাল আছে কিন্তু সবজি বা কাঁচাবাজার কিছু নেই। ছোট ছোট কিছু বাচ্চা আছে আমাদের সাথে। আমাদের আয় রোজগারও বন্ধ। নিজেদের টাকায় যে কিছু কিনে আনাবো সে উপায় নেই। আবার কাউকে বলতেও পারছি না।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!