পাহাড়তলীর রাস্তার ওপর বিদ্যুতের খুঁটি, রাতে রীতিমতো মরণফাঁদ

সকালে অফিসে যাওয়ার পথে রাস্তায় হঠাৎ লোকজনের অস্বাভাবিক ভিড়। গাড়ি দাঁড় করিয়ে এগিয়ে যান চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) একজন উর্ধতন কর্মকর্তা। কাছে যেতেই তিনি জানতে পারেন, চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীর ক্যান্টিন গেইট ভাঙা ব্রিজের ঢালু রাস্তায় একটি লেগুনা গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে পেছনে থাকা সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িকে ধাক্কা দেয়। গাড়ির সামান্য ক্ষতিকে কেন্দ্র করে দুই ড্রাইভারের হাতাহাতি। উৎসুক জনতা সেই দৃশ্য দেখতে জড়ো হলে রাস্তায় তৈরি হয় যানজট।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকালের এই ঘটনায় লেগুনার ড্রাইভারকে ৩০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে পরিস্থিতির ইতি টানা হলেও দেখা যায়, এ ধরনের সমস্যা এখানে প্রায়ই ঘটছে। রাস্তার অনেকখানি স্থানজুড়ে বৈদ্যুতিক ৫-৬ টি পিলার থাকায় তার ফাঁকে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয় যখনতখন। আবার বিদ্যুতের পিলারভর্তি এই রাস্তা রাতের বেলায় হয়ে দাঁড়ায় রীতিমতো মৃত্যুফাঁদ।

এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন ১৩নং ওয়ার্ড ক্যান্টিন গেইট ভাঙা ব্রিজ এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাস্তা সম্প্রসারণ শেষে রাস্তায় ৬-৭টি লাইনসহ বৈদ্যুতিক পিলার অপসারণ না করায় রাস্তাটি রীতিমতো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, রেলওয়ের নিজস্ব সম্পত্তির এই রাস্তা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণ করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়। সিটি করপোরেশন প্রকল্পের অধীনে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে। ১৩ নং ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরন জানান, পাহাড়তলী পুলিশ বিট থেকে টাইগারপাস প্রকল্পের কাজ প্রায় ৬০ ভাগ শেষ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যান্টিন গেইট থেকে আমবাগান পর্যন্ত রাস্তায় ছয় থেকে সাতটি বৈদ্যুতিক পিলার দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা আগলে দাঁড়িয়ে আছে। এগুলো অপসারণের কোনো উদ্যোগও নেই।

সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎ বিভাগকে পিলারগুলো অপসারণের বিষয়ে অবহিত করা হলেও তাদের কোনো তৎপরতা নেই। অন্যদিকে খুলশী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে যোগাযোগ করা হলে সেখানে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা জানান, বৈদ্যুতিক পিলারের স্থানান্তরের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি।

জানা গেছে, ভারী যানবাহন চলাচল করায় ইতিমধ্যে রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। রেল শ্রমিক ও স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের রীতিমতো প্রাণ হাতে নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলতে হয়। ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই।

রেলওয়ে স্কুল ও ওয়ার্কসপ গেইট এলাকার রাস্তায় দুই পাশে চার লেইনের স্পিডব্রেকার দিলেও সেগুলো রঙ দিয়ে চিহ্নিত না করায় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই— অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীর।

সিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, বৈদ্যুতিক পিলারগুলো সত্যিই বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। শুধু তাই নয়, গতিরোধকগুলো রং দিয়ে চিহ্নিত করে না দেওয়ায় রাতের বেলা যানচলাচলে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশংকা থেকে যাচ্ছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!