পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলা উত্তাল হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে দীঘিনালার লারমা স্কয়ার এলাকায় সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার একপর্যায়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর দোকান ও ঘরবাড়ি আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। অন্তত ৬০টি দোকান এই ঘটনায় পুড়ে যায় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে খাগড়াছড়ি শহরের নোয়াপাড়া এলাকায় মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে খাগড়াছড়ি সদরের শালবন মধ্যপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ মামুন (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে পেটানো হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ওইদিন খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
নিহত মামুনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে, যার মধ্যে ১৪টিই চুরির অভিযোগে। বুধবারও চোর সন্দেহে মামুনকে মারধর করে স্থানীয়রা।
এই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে বাঙালিরা দীঘিনালার জামতলী ও বোয়ালখালী বাজারের দিক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে অন্তত ৪০০ বাঙালির সমাগম ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বাঙালিরা লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দেয় পাহাড়িরা। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় এ সময়। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ার ও দীঘিনালা কলেজের পাশের শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। মিছিল থেকেই অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে পাহাড়িরা অভিযোগ করেছে।
পাহাড়িরা অভিযোগ করেছে, বিক্ষোভকারীদের অনেকেই মিছিল থেকে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এর একপর্যায়ে স্থানীয় একটি মসজিদের লাউডস্পিকার থেকে ঘোষণা আসে যে পাহাড়িরা বাঙালিদের ওপর হামলা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকশ বাঙালি লোক সেখানে জড়ো হয়ে পাহাড়িদের ওপর হামলা চালাতে শুরু করে এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সিপি