পাসপোর্ট জমা দেননি সাবেক এমপি মেহজাবিন ও মুরাদ, ৬০ দিনের মধ্যে দিতে হবে ব্যাংকের ১৮৩ কোটি টাকা

বেসিক ব্যাংকের ১৮৩ কোটি ঋণখেলাপি মামলায় সাবেক এমপি মেহজাবিন দম্পতির বিরুদ্ধে একতরফা রায়, ঋণ পরিশোধে ৬০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত। মামলায় আদেশ অমান্য করে আদালতে অনুপস্থিত ও পাসপোর্ট জমা না দেওয়ায় মেহজাবিন মোরশেদ ও তার স্বামী মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে একতরফা রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। একই আদেশে এই ঋণখেলাপি মামলায় আইজিনেভিগেশন লিমিটেডের এমডি মেহজাবিন মোরশেদ, তার স্বামী মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমসহ ৪ জনকে ১৮৩ কোটি টাকার ডিক্রি ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর বেসিক ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা বাদি হয়ে খেলাপি ঋণ আদায়ে মেহজাবিন মোরশেদ, হুমাইরা করিম, সৈয়দ মোজাফফর হোসেন, মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ১৮৩ কোটি ৭১ লাখ ৫৬ হাজার ৯১৮ টাকার ঋণখেলাপি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বুধবার একতরফা শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। বেসিক ব্যাংক হাজিরা দাখিল পূর্বক ফিরিস্তি সহকারে (১-৬) ক্রমিক পর্যন্ত ডকুমেন্ট দাখিল করেন। এদিকে মাহজাবিন মোরশেদ একতরফা প্রত্যাহার করে জেরার জন্য আবেদন করেন। আরেকটি দরখাস্ত দিয়ে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির আবেদনও করেন মাহজাবিন মোরশেদ।

জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৯ জানুয়ারি মেহজাবিন মোরশেদ, হুমাইরা করিম, সৈয়দ মোজাফফর হোসেন, মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম এই চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। একই সঙ্গে ১৮ নম্বর আদেশে তাদের পাসপোর্ট আদালতে জমা করার নির্দেশও দেন আদালত। তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় বসবাস করায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।

২৯ জানুয়ারির আদেশে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের পাসপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন আদালত। ওই সময়ের মধ্যে তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য পুলিশকে নির্দেশনাও দেন আদালত। ৬টি ধার্য তারিখ পার হলেও তারা আদালতে আদেশ অমান্য করে পাসপোর্ট আদালতে জমা দেননি এবং আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টেও আবেদন করেননি। আদালতের আদেশ অমান্য করায় মামলাটি একতরফা শুনানির জন্য ধার্য করা হয়। পাসপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তা দাখিল না করে মাহজাবিন মোরশেদের একতরফা থেকে প্রত্যহারের দরখাস্তও নামঞ্জুর করেন আদালত এবং আদেশে উল্লেখ করা হয়, এই মামলার বাদি বেসিক ব্যাংক পক্ষ হতে ২০২১ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮৩ কোটি ৭১ লাখ ৫৬ হাজার ৯১৮ টাকা পাওনা আছে।

Yakub Group

সার্বিক পর্যালোচনায় বেসিক ব্যাংক মামলা প্রমাণ করতে পেরেছে এবং ডিক্রি পেতে অধিকারী। তাই মেহজাবিন মোরশেদসহ এই মামলার বিবাদিদের বিরুদ্ধে একতরফা সূত্রে খরচসহ ১৮৩ কোটি ৭১ লাখ ৫৬ হাজার ৯১৮ টাকার টাকার ডিক্রী করা হয়। ডিক্রিকৃত টাকার উপর মামলা দায়ের থেকে আদায়কালতক ১২% বার্ষিক সরল হারে সুদের ডিক্রি হয়। একইসঙ্গে মেহজাবিন মোরশেদ, হুমাইরা করিম, সৈয়দ মোজাফফর হোসেন ও মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমকে ৬০ দিনের মধ্যে ডিক্রিকৃত টাকা বেসিক ব্যাংকে পরিশোধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়। আর টাকা পরিশোধ না করলে অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর ৫০(২) ধারা অনুযায়ী সুদসহ বেসিক ব্যাংক আইনগত পদ্ধতিতে ডিক্রীকৃত টাকা বিবাদিদের থেকে আদায় করতে পারবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন আদালত।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!