পাসওয়ার্ড চুরি করে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের শিবেরহাট শাখার সাবেক সিনিয়র মেসেঞ্জার কাম-গার্ড (নিরাপত্তা প্রহরী) আবুল কালাম আজাদ। চাকরিতে থাকাকালীন সময়ে ওই শাখার কর্মকর্তাদের কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড ও আইডি কৌশলে জেনে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকের অর্থ স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেন তিনি। এভাবে ১১ গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব থেকে পৌনে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ সরিয়েছেন এই নিরাপত্তা প্রহরী।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তি সন্দ্বীপ থানার মুছাপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেলার মাস্টারের বাড়ির হাজী মো. ইব্রাহিমের ছেলে।
২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সন্দ্বীপ থানায় মামলা দায়ের করেন পূবালী ব্যাংক শিবেরহাট শাখার ব্যবস্থাপক। এই মামলাটি দুদক তফশিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় ওইদিন সন্দ্বীপ থানার জিডি ১১৮৮ মূলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর বরাবরে পাঠান। ২০২০ সালের ২ মার্চ এবিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশকে।
অনুসন্ধান শেষে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন দুদকের সাবেক এই কর্মকর্তা।
২০১২ সালে এইচএসসি পাশ করেন আবুল কালাম আজাদ। ২০১৩ সালে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার শিবেরহাট শাখার সাবেক মেসেঞ্জার কাম-গার্ড হিসেবে অস্থায়ী চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১৪ সালে তার চাকরি নিয়মিত করা হয়। ২০১৫ সালে তার চাকরি স্থায়ী করা হয়।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারিতে সিনিয়র মেসেঞ্জার কাম-গার্ড হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। পদোন্নতি লাভের পর তাকে ওই শাখায় ব্যাংকের গ্রাহকের অন্যান্য কালেকশনের চেক সংগ্রহ করা, ব্যাংকের রেজিস্ট্রার মেনটেইন করা, প্রতিদিনের ভাউচার, হিসাব খোলার ফরম সেলাই ও সংরক্ষণ করাসহ শাখার প্রধান কর্তৃক নির্দেশিত মোতাবেক অন্যান্য কাজ করতেন আবুল কালাম আজাদ। এসব কাজ করতে গিয়ে ব্যাংক শাখার কর্মকর্তাদের কম্পিউটারের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড জেনে যান। পরে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন সময়ে ওই শাখার ১১ জন গ্রাহকের কৌশলে মোট ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
আজাদ বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপপরিচালক মো. আতিকুল আলম।
এমএ/ডিজে