পাঁচলাইশে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ ফেলে উধাও শ্বশুর বাড়ির লোকজন, গ্রেপ্তার ৩

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার কসমোপলিটন এলাকায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী-শাশুড়িসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

পাঁচলাইশে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ ফেলে উধাও শ্বশুর বাড়ির লোকজন, গ্রেপ্তার ৩ 1
অভিযুক্ত ফাহাদ চৌধুরীর বড় বোন তাসমিলা আফরোজ (৪৪), তার স্বামী মো. লোকমান (৪২) ও ফাহাদের আরেক বোন নাজিফা সালসাবেন (৩০) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার

এর আগে গৃহবধূর মৃত্যুর পর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাওয়া শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

নিহত গৃহবধূর নাম শাহনাজ কামরুন নাহার (২৫)। তিনি প্রিন্স মোহাম্মদ আল ফাহাদ চৌধুরীর স্ত্রী। তার বাড়ি পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট এলাকায়। নগরীর কসমোপলিটন আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর সড়কে কাশেম বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় তারা থাকেন। শাহনাজ ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় গৃহবধূর বড় ভাই বাদি হয়ে মামলা করার পরপরই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—শাহনাজের স্বামীর বড় বোন তাসমিলা আফরোজ (৪৪), তার স্বামী মো. লোকমান (৪২) ও আরেক বোন নাজিফা সালসাবেন (৩০)।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন—প্রিন্স মোহাম্মদ আল ফাহাদ চৌধুরী (২৭), শাহনাজের শাশুড়ি চেমন আরা রফিক (৬৪), শানহাজের স্বামীর অপর দুই বোন খাদিজা আফরোজ (৩৭) ও তাহমিনা আফরোজ (৩২)।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর শাহনাজের সঙ্গে আল ফায়াদ চৌধুরীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় স্বামী যৌতুক দাবি করতো। ভুক্তভোগী শাহনাজ ৯ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা থাকায় অনাগত সন্তান ও নিজ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সব সহ্য করে সংসার করছিল। ধীরে ধীরে তার ওপর নির্যাতনের চাপ আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। গত ১৬ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে শাহনাজের শাশুড়ি ফোন করে ভাইয়ের স্ত্রীকে জানায়, তার বোন অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। পরে ভাই কর্মসূত্রে ঢাকায় থাকায় একাধিকবার তাদের মুঠোফোনে ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেনি।

শাহনাজের ভাই স্ত্রীর মাধ্যমে জানতে পারে তার বোনকে চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই হাসপাতালে তাকে ভর্তি না করিয়ে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহনাজকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ‘লিগ্যাচার মার্ক এরাউন্ড নেক’। এরপর শাহনাজের লাশ সেখানেই ফেলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

শাহনাজের পরিবারের ধারণা, শ্বশুর বাড়ির লোকজনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং প্ররোচণার কারণে শাহনাজ আত্মহত্যা করেছে।

নগরীর পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার মো. আরিফ হোসেন বলেন, শাহনাজ কামরুন নাহার নামের ওই গৃহবধূ ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আত্মহত্যা প্ররোচণার অভিযোগে তার বড় ভাই ৭ জনের নামের মামলা করেছেন। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।

আরএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm