পশুর হাটের নিরাপত্তায় ৫ হাজার পুলিশ, আকাশে উড়বে ড্রোনও

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরজুড়ে পাঁচ হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়ন করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। একই সঙ্গে কোরবানির পশু আসা থেকে শুরু করে গরুর বাজারের নিরাপত্তা, ঈদ জামাত ও পশুর চামড়া ঢাকার ট্যানারিতে পৌঁছা পর্যন্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি প্রথমবারের মত সিসিটিভির পাশাপাশি গরুর বাজারগুলোতে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএমপি।

শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে নগরীর দামপাড়াস্থ পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান এসব তথ্য জানান। এ সময় পুলিশের যেকোনও সহযোগিতার জন্য জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ছাড়াও সিএমপির কন্ট্রোল রুম ০৩১-৬৩৯০২২, ০৩১-৬৩০৩৫২, ০১৬৭৬১২৩৪৫৬ ও ০১৯৮০৫০৫০৫০ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন।

পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে নগরীতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন অনুমোদিত প্রত্যেকটি হাটে থাকবে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। গরুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণের মেশিনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা চাইলে পুলিশের মানি এসকর্ট সুবিধাও নিতে পারবে। পশুর হাটে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই প্রথমবারের মত ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পুরো হাট নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’

সভায় সিএমপির সকল উপ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও ১৬ থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিএমপির সকল উপ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও ১৬ থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ছিনতাইকারী ও মলমপার্টির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। যারা জামিনে মুক্ত হয়েছে তাদেরকেও নজরে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের অভিযানে অনেক ছিনতাইকারী মলমপার্টির সদস্য গ্রেপ্তারও হয়েছে। হাটের নিরাপত্তার পাশাপাশি বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশন কেন্দ্রীক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হবে। এছাড়া ঈদ জামায়াত ও কোরবানির চামড়া সন্ত্রাস বন্ধেও পুলিশ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’

সিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান আরো বলেন, ‘প্রতিবার কোরবানির পশুবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসে। গরু বহনকারী সকল ট্রাক ট্রাফিক পুলিশের চেকিংয়ের আওতার বাইরে থাকবে। অস্ত্র কিংবা মাদক পরিবহনের সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কোনও গরুবাহী ট্রাকের কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য থামানো হবে না। কোনো অবস্থায় বাধা দেওয়া যাবে না। যে কোনও সংস্থার চাঁদাবাজি থেকে পশুবাহী ট্রাককে রক্ষা করা হবে।’

পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ও হয়রানিমুক্ত পরিবেশে গরু-ছাগল কেনা বেচা এবং সবার জন্য ঈদুল আজহা শান্তিপূর্ণ নির্বিঘ্ন ও আনন্দঘন করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। গরুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হয়রানি-চাঁদাবাজি বন্ধ করতে নগর পুলিশের সবগুলো টিম একই সাথে কাজ করবে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ পুলিশের বিশেষায়িত সবগুলো টিম গরুর হাট ও গরুবাহী গাড়ির নিরাপত্তায় সমন্বিতভাবে কাজ করবে। পাঁচ হাজার পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব এপিবিএনও কাজ করবে কোরবানীর সময় নগরবাসীর নিরাপত্তায়।’

তিনি বলেন, ‘কয়েকটি জায়গায় সড়কের পাশে সিটি করপোরেশন পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া দুঃখজনক। সিটি করপোরেশনের কাছে আমাদের প্রস্তাব ছিলো যানজট রোধে কোনো অবস্থায় সড়কের পাশে পশুর হাট যেন না থাকে। কিন্তু কয়েক জায়গায় সিটি করপোরেশন সড়কের পাশে হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে। এটি দুঃখজনক। তবে সড়কে না হলেও কেউ যদি বাড়ির আঙ্গিনায় নিজ পাড়ায় মাঠে দশটি গরু রেখে বিক্রি করে তাহলে সেখানে পুলিশের করার কিছুই নেই।’

এ মতবিনিময় সভায় সিএমপির সকল উপ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও ১৬ থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!