দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র চট্টগ্রামের হাটহাজারীর হালদা নদী। দূষণ ও বাঁধের জন্য বৈশিষ্ট্য হারাতে বসেছে এ নদী। হালদায় ১২ কিলোমিটার ধরে ব্লক বসানো ও বাঁধ নির্মাণের ফলে প্রতিদিন এখানে ভিড় করছে হাজারো পর্যটক। নদীর রূপ দেখতে আসা এসব পর্যটক প্রতিদিন হালদায় ফেলছে প্লাস্টিকের প্যাকেট, পলিথিন, প্লেট, গ্লাস, পানির বোতল, চিপসসহ নানা প্লাস্টিকের আবর্জনা।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে হাটহাজারীর রামদাস চৌধুরীহাটে গিয়ে দেখা যায়, হাজারও নারী-পুরুষ নদীর পাড়ে ভিড় করছে। কেউ কেউ নদীতে নৌকা ভ্রমণ করছেন। বেশিরভাগ নারী-পুরুষের হাতে দেখা গেছে প্লাস্টিকের মোড়কে খাবারের প্যাকেট। খাওয়া শেষে অনেকে এসব অপচনশীল প্লাস্টিক-পলিথিন নদীতে ফেলে দিচ্ছে।
আশপাশ ঘুরে দেখা গেছে, এ নদীর পাড়ে উঠেছে অন্তত ১৫টি খাবারের দোকান। বর্জ্য সংগ্রহের কোনো ডাস্টবিন না থাকায় এসব দোকান থেকে পর্যটকরা প্লাস্টিকের পণ্য কিনে নদীতে ফেলে দিচ্ছেন। এর ফলে দূষিত হচ্ছে হালদা নদী।
আমিনুল ইসলাম মুন্না নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রতিদিন পর্যটকদের ফেলে যাওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য মা মাছ ও শুশক, ডলফিনের চরম ক্ষতি ডেকে আনছে। হালদাকে দূষণ থেকে বাঁচাতে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। না হয় চরম ক্ষতির মুখে পড়বে হালদার অস্তিত্ব।’
রবিউল হোসেন নামের এক পর্যটক বলেন, ‘হালদা শুধু দেশের নয়, এটি বিশ্বের সম্পদ। এ নদীকে রক্ষায় আমাদের সচেতন হতে হবে। হালদা রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
হালদা গবেষণা সেন্টারের সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘হালদায় প্লাস্টিক দূষণের কারণে মা মাছ, শুশক, ডলফিন মারা যাচ্ছে। আমাদের সচেতন হতে হবে। নদীতে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন চাইলে সচেতনতার জন্য সাইনবোর্ড দিতে পারে। এছাড়া হালদা দূষণ রোধে প্লাস্টিকের উৎস দোকানগুলো বন্ধ করে দেওয়া জরুরি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন, ‘হালদা দূষণ রোধে নিয়মিত অভিযানসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্লাস্টিক দূষণের বিষয়টি জেনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নিয়ে আগামী একসপ্তাহের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এএইচ/সিপি