পরকীয়ায় ধরা স্বামী, স্ত্রীসহ শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যা করতে চাপাতি নিয়ে শ্বশুরালয়ে

স্বামী সুজন দাশের পরকীয়ার প্রমাণ পেয়ে পারিবারিক কলহ শুরু তাদের। এর জের ধরে বাপের বাড়িতে চলে যান স্ত্রী। স্ত্রীকে ঘরে ফেরানোর চেষ্টায় চালিয়ে ব্যর্থ হন স্বামী। আর উপায় না দেখে নেন স্ত্রীকে হত্যার সিদ্ধান্ত। সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়িকেও হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী চাপাতি নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে হাজির জামাই। কিন্তু শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে আটকে রেখে খবর দেয় পুলিশকে। পুলিশ হাজির পর পুলিশের দিকেও তেড়ে যান সুজন। নানা নাটকীয়তার পর পুলিশ তাকে আটক করেছে।

শনিবার (৭ আগস্ট) রাতে এমন চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার গোসাইলডাঙ্গা এলাকাতে এ ঘটনা ঘটে।

সুজন দাশ (৪২) চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার পূর্ব মেখল আলীপুর গ্রামের সাধন মেম্বারের বাড়ির মৃত সাধন দাশের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্বশুরের বাসায় গেলেও পুলিশের উপস্থিতি দেখে আত্মহত্যার চেষ্টাও চালান সুজন। ফলে তাকে নিবৃত করা বেশ কঠিনই হয়ে দাঁড়ায় পুলিশের জন্য।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, ১৩ বছর আগে সুজনের বিয়ে হয় সুতৃষ্ণা দাশের সাথে। এই ঘরে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। তারা চট্টগ্রামের আসকারদীঘি এলাকায় থাকেন। সম্প্রতি সুজন আরেক মেয়ের সাথে পরকীয়া করতে গিয়ে স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে যান। এটা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হয়। সর্বশেষ তিন দিন আগে এ বিষয়ে তুমুল ঝগড়া হলে সুতৃষ্ণা পূর্ব গোসাইলডাঙ্গার মিনু ম্যানশনে বাবার বাড়ি চলে আসেন। সুজন বারবার তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বললেও সুতৃষ্ণা বাবার বাড়ি ছেড়ে যেতে রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই সুতৃষ্ণা ও তার বাবা-মাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন সুজন।

ওসি মহসীন বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন দুটি চাপাতি কেনেন সুজন। শুক্রবার রাতে যখন ওই দুই চাপাতি নিয়ে মিনু ম্যানশনের পঞ্চম তলায় উঠছিলেন তখন তাকে দেখে ফেলেন সুতৃষ্ণা। ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। সুজন প্রথমে দরজা ধাক্কা দেন। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা না খোলায় এলোপাতাড়ি দরজায় কোপাতে থাকেন সুজন। এতে দরজা কিছুটা নড়বড়ে হলে ভেতরে আলনা, টেবিল, সোফা দিয়ে দরজা আটকে রাখেন সুতৃষ্ণা ও তার পরিবার।

ওসি মহসীন আরও জানান, এ সময় সেখান থেকে থানায় ফোন দিলে রাত ১১টা ১০ মিনিটে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। কিন্তু পুলিশকে দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সুজন। চাপাতি নিয়ে পুলিশের দিকেও তেড়ে আসেন কয়েকবার। এক পর্যায়ে নিজের গলায় চাপাতি ধরেন সুজন। পুলিশ চলে না গেলে নিজেকে ‘শেষ’ করে দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি। অবশেষে এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন কৌশলে সুজনকে নিবৃত্ত করে তাকে আটকে সক্ষম হয় পুলিশ। তার কাছ থেকে নতুন কেনা সেই দুটি চাপাতিও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টা, হত্যাপ্রচেষ্টা ও হুমকি প্রদর্শনের অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এআরটি/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm