কক্সবাজার থেকে এসে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় রাত কাটিয়ে নৌবাহিনীর জাহাজে করে নোয়াখালীর ভাসানচরের নতুন ঠিকানায় রওনা হয়ে গেলেন ৪২৮টি পরিবারের এক হাজার ৮০৫ জন রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল নয়টায় পতেঙ্গা থেকে নৌপথে এই রোহিঙ্গারা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। পতেঙ্গা বোট ক্লাব ঘাট ও কোস্টগার্ড ঘাটে নৌবাহিনীর জাহাজে করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হল। এর আগে সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) মোট ৪৩টি বাসে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে রোহিঙ্গাদের এই দলটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় আসে। সেখানে বিএএফ শাহীন কলেজের মাঠে তারা রাতযাপন করে।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে প্রথমবারে ১৩টি বাসে, দুপুর ২টা ২০ মিনিটে দ্বিতীয়বারে ১৭টি বাসে এবং বিকেল সোয়া ৫টায় ১৩টি বাসে ৪২৮টি পরিবারের এক হাজার ৮০৫ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম আসেন। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাদের নিয়ে বাসগুলো চট্টগ্রামে উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
তারও আগে রোববার (২৭ ডিসেম্বর) রাত থেকে টেকনাফের ও উখিয়ার বৃহত্তর কুতুপালং এলাকার বিভিন্ন শিবির থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসা হয় উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্টে। রোহিঙ্গাদের সেখানে আনা হয় শিবির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও এনজিও কর্মীদের সহযোগিতায় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে।
গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে সমুদ্র উপকূলে আটকেপড়া তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে রাখা হয়েছিল।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ওই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।
কিন্তু ২০১৮ সালে যখন প্রথম তাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়, তখন থেকেই রোহিঙ্গারা সেখানে যাবার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। পরে অবশ্য অনেকে ‘স্বেচ্ছায়’ সেখানে যেতে রাজি হয়।
সিপি