পতেঙ্গা-ইপিজেডে ৫ টাকার গাড়ি ভাড়া ২০ টাকা!

৫ নম্বর রুটে গাড়ি নেই পাঁচটিও

পরিবহন সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্ধারিত ভাড়া চেয়ে অতিরিক্ত ৩-৪ গুণ ভাড়া আদায় করছে বিভিন্ন সংগঠনের নিয়ন্ত্রণাধীন হিউম্যান হলার ও অটোটেম্পোর চালকরা। এছাড়াও নির্ধারিত স্টপেজের আগে নানা অজুহাতে দেখিয়ে নামিয়ে দেয় যাত্রীদের। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন পতেঙ্গার একাংশের কর্মস্থলগামী মানুষ— এমন অভিযোগ করেছেন ওই রুটের যাত্রীরা।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে সরেজমিনে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় ৫ নম্বর রুটে গিয়ে দেখা যায়, বিকেল ৪টার পর থেকে আনোয়ারা, কর্ণফুলী ও এয়ারপোর্টগামী যাত্রীরা সিমেন্ট ক্রসিং মোড়ে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকার পর মেলে না কোন গণপরিবহনের। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ৩-৪ গুণ ভাড়া আদায় করছে হিউম্যান হলার ও টেম্পো।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরের এয়ারপোর্ট, সিমেন্ট ক্রসিং, টাইগারপাস, নিউমার্কেট হয়ে আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের মোড় পর্যন্ত নির্ধারিত সীমানায় ৫ নম্বর রুট। এই রুটে প্রায় ৭৫টি গণপরিবহন থাকলেও অনুমোদন রয়েছে ৩৮-৪২টির। বর্তমানে সারাদিনে ওই রুটে চলছে ৩-৪টি গণপরিবহন।

সূত্র বলছে, ইপিজেড থেকে এয়ারপোর্টগামী তিন চাকা অটোটেম্পো ও চার চাকাবিশিষ্ট হিউম্যান হলার রয়েছে দেড় শতাধিক। এসব গাড়ি থেকে প্রতিদিন ১২০-১৫০ চাঁদা আদায় করে সেলিম-মাওলা ও ছালাম সিন্ডিকেট। একই সঙ্গে নিউমুরিং এলাকার নাছিরও প্রতিটি গাড়ি থেকে চাঁদা নিচ্ছেন ২০ টাকা।

এদিকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানতে সেলিমকে বেশ কয়েকবার কল করা হলে তার পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

পতেঙ্গা-ইপিজেডে ৫ টাকার গাড়ি ভাড়া ২০ টাকা! 1

এয়ারপোর্ট থেকে আসা একাধিক কর্মস্থলগামীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই রুটে সারাদিন ২-৩টি বেশি গণপরিবহন দেখা যায় না। পতেঙ্গার ও নদীর ওপার থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি লোক শহরে যাতায়াত করছেন। গণপরিবহন সংকটের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে হিউম্যান হলার ও অটোটেম্পো চালকরা। ইপিজেড-সিমেন্ট ক্রসিং থেকে এয়ারপোর্ট রুটে ভাড়া মাত্র ৫ টাকা। সেখানে এসব গাড়িতে ওঠানামা করলে নিচ্ছে ১০ টাকা। সন্ধ্যার পর এই ভাড়া হয়ে যায় ২০ টাকা। যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘৫ নম্বর রুটের যেসব বাস নির্ধারিত, সেগুলো চলছে ৬ নম্বর রুটে। যাত্রী সংকটের কারণে তারা এটা করছেন। কিন্তু এটা তো অন্যায়। ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা কেন চলতে দিচ্ছে এক রুটের গাড়ি অন্য রুটে? তারা যদি মামলা ও জরিমানা ঠিকমতো আদায় করেন, তাহলে তো এই সমস্যা থাকার কথা নয়?’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগরের ট্রাফিক পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দরজোন) তারেক আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিন বলেন, ‘গণপরিবহনগুলো যাতে রুট পরিবর্তন করতে না পারে, উল্টোপথে গাড়ি আসলে সেগুলোকে পতেঙ্গার দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক রুট থেকে আরেক রুটে গাড়ি চললে জরিমানা করছি। রূপ পরিবর্তন করায় বেশ কিছু গণপরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এই সমস্যা সমাধান করতে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!