নৌকার বিদ্রোহী হয়ে বহিস্কারই হচ্ছেন ৫ নেতা, চিঠি যাচ্ছে আজ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা চূড়ান্ত হয়েছে। দুই দফা তারিখ নির্ধারণ করেও আগস্ট মাস, ডেঙ্গু ও গুজব প্রতিরোধে ব্যস্ত সময় পার করার কারণে তা পিছিয়ে গেলেও এবার চূড়ান্তভাবেই শাস্তির পথেই এগুচ্ছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের পাঁচ বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ নেতার কাছে বহিষ্কারাদেশের চিঠি পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্র থেকে।

দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলার পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে ফটিকছড়ি ও লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুজন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিতও হয়েছেন।

তবে প্রথম দিকে শুধু আওয়ামী লীগের নয়, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেসব নেতা উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিথিলতা দেখায় আওয়ামী লীগ।

এরআগে গত ১২ জুলাই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। সেই সিদান্তের আলোকেই মূলত এই শাস্তি কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।

মঙ্গলবার ধানমণ্ডিতে সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা শেষে তিনি বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতেই মূলত এই কঠোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। আগামী ৮ সেপ্টম্বর সকলের কাছে চিঠি যাবে।’

তিনি জানান, নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে যেসব মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী নেতারা কাজ করেছেন, তাদেরও কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দর্শানো কারণের জবাব যথার্থ না হলে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হতে পারেন অভিযুক্তরা।

চট্টগ্রামে দলীয় পদে থাকার পরও সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করায় শাস্তির মুখোমুখি হতে যাওয়া নেতারা হলেন চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল। বাঁশখালী উপজেলায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম। বোয়ালখালীতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল কাদের সুজন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের এডহক কমিটির সহ সভাপতি শ্রমিক নেতা এসএম নুরুল ইসলাম।

এছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় কোনও পদে না থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেছেন পটিয়ায় সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মুহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন। চন্দনাইশে এলডিপি থেকে এসে আওয়ামী লীগে ফুল দিয়ে যোগ দিলেও আনুষ্ঠানিক কোনো পদে না থাকা নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার। স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও কোনও পদে নেই উপজেলা নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!