নিয়োগপত্র পাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা, খুশি দুপক্ষই

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়া নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্তে সম্মত হয় দুই পক্ষ। সভায় এখন থেকে শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মালিক পক্ষ, অন্যদিকে নিয়োগপত্র নিয়ে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রমের বিষয়ে এই সভার আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সেখানে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিকে ডাকে সংসদীয় কমিটি।

এর ফলে নিয়োগপত্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা শ্রমিক মালিক দ্বন্দ্বের অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে এই খাত সংশ্লিষ্টরা। ১৯৮৩ সালে করা সড়ক আইনে শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও এত দিন ধরে তা বাস্তবায়িত হয়নি। আর নিয়োগ পত্র দেয়া নেওয়া কার্যকর না হওয়ার জন্য এতদিন ধরে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দুষছিলেন।

নিয়োগপত্র কার্যকরের নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে চট্টগ্রামের পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, নিয়োগপত্র দেওয়াটা তো খারাপ কিছু না। একজন মালিক যখন একজন ড্রাইভারকে গাড়ি দেবে তখন শর্তে গাড়ি দিচ্ছে, লাভ-ক্ষতি কী, রক্ষণাবেক্ষণ কি শর্ত এসব উল্লেখ করে একটা নিয়োগপত্র দেওয়া যায়।

তবে এসব বিষয়ে শ্রমিকদের অনাগ্রহের কথা উঠে আসে তার সাথে আলাপচারিতায়। বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘ড্রাইভাররা তো এসব বোঝে না। তারা জানে খালি সকালে এসে গাড়ির চাবি নিয়ে যাবে বিকেলে মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিয়ে গাড়ি জমা দিয়ে চলে যাবে। আসলে আমাদের এখানে অনিয়মগুলো এমনভাবে চর্চা করা হয়েছে যে নিয়মকে এখন অনিয়ম মনে করা হয়। এই অবস্থার নিরসনে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ বলেন, আমরা অনেকদিন ধরেই এই বিষয়টি কার্যকরের দাবি জানিয়ে আসছি। মালিক পক্ষের অনীহার কারণে এতদিন এটি বাস্তবায়ন হয়নি।

নিয়োগপত্র বাস্তবায়নে শ্রমিকদের অনাগ্রহের ব্যাপারে মালিকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনাগ্রহ কেন থাকবে। নিয়োগপত্র কার্যকর না হওয়ার আমরা দীর্ঘদিন অধিকার বঞ্চিত হয়ে আসছি। আমাদের মালিকরা ইচ্ছা মত চাকরি দিত আবার ছাঁটাই করতো। শ্রমিকদের যৌক্তিক অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম। এখন এই আইনের ফলে আমরা শ্রমিক আইন অনুযায়ী সকল সুযোগ সুবিধা পাব। এতদিন লেবার কোর্টে যেতে পারতাম না। এখন সে সুবিধাও পাব। এই আইনের বিষয়ে আমাদের অনাগ্রহ কেন থাকবে। আমরা বরং এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অনেকদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছিলাম। উনাদের স্বার্থেই মালিকরা এটি কার্যকর হচ্ছিল না। এখন যেহেতু উনারা রাজি হয়েছেন উনাদের ধন্যবাদ জানাই।’

এআরটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!