নিষেধ না মেনেই কর্ণফুলীতে চলছে যাত্রী পারাপার
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের অঘোষিত লকডাউন উপেক্ষা করে হরদম চলছে কর্ণফুলী নদীতে যাত্রী পারাপার। কেউবা জরুরি কাজের বাহানা, আবার কেউ পরিবার চালানোর অজুহাত দেখিয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ৬-৭ জন যাত্রী নিয়ে নদী পার হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেশে অঘোষিত লকডাউন থাকার পরও হরদম চলছিল ১৫টি ঘাটের নৌযান পারাপার। গত ১০ এপ্রিল ফিরিঙ্গিবাজারে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পরদিন সিএমপির পক্ষ থেকে নৌযানে যাত্রী পারাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এরপর থেকে কিছুদিন জরুরি সেবা ছাড়া যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকলেও অল্পসংখ্যক লোকবহনকারী নৌযান চলছিল।
সোমবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘাটে গিয়ে দেখে যায় ভিন্ন চিত্র। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে যাত্রী পারাপারের কাজ। এক সাম্পানে ৬-৭ জন যাত্রী নিয়ে নদী পার করতেও দেখা যায়। সামাজিক দূরত্ব না মেনেই অবাধে চলছে যাত্রী পারাপার।

নদী পারাপারে অপেক্ষমাণ কয়েকজন যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা কেউ অসুস্থ ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন। কেউ যাচ্ছেন আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে। কেউ জরুরি কাজে, আবার কারও অফিস খোলা। আর তাই নদী পার হতে হচ্ছে।
গার্মেন্টস কর্মী সালমা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আজকে আমার বেতন দেওয়ার কথা তাই বাধ্য হয়ে নদী পার হতে হচ্ছে।’
নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কেন নৌ পারাপার করা হচ্ছে— এ নিয়ে একজন সাম্পান মাঝিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা সাম্পান চালাই পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে। এতদিন বসে আছি। কেউ তো আর আমাদের খাবার দিতে আসলো না।’
আরেকজন সাম্পান মাঝি বলেন, ‘ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কিছু টাকা পেয়েছি। তা দিয়ে তো এতদিন চলে না। সরকার তো আমাদের এই দূরাবস্থার জন্য কিছু করবে না। তাই নিরুপায় হয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই সাম্পান চালাচ্ছি।’
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এসএম পেয়ার আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা সিএমপির নিষেধাজ্ঞার পর থেকে সব ধরনের যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু জরুরি সেবা দিতে কিছু নৌযান ছাড়া বাকিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার কাছেও অভিযোগ আসছে এখনও অনেক সাম্পান চলাচল করছে। সেসব সাম্পানগুলো নিরুপায় হয়ে নদীতে সাম্পান নামাচ্ছে। তারা গরিব মানুষ লকডাউন তো বুঝে না, তারা শুধু পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য সাম্পান নিয়ে নদীতে নামে।’
সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির এই সভাপতি আরও বলেন, ‘আমাদের ফেডারেশনের পক্ষ যতটুকু সামর্থ্য ছিলো সাহায্য সহযোগিতা করা হয়েছে। সরকার যেন এই সাম্পান মাঝিদের দিকে একটু সুনজর দেন।’
এসএইচ/সিপি




