বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) ঢাকার কমান্ড্যান্ট শহীদ উল্লাহর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
দুদক আটটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ জুন থেকে অনুসন্ধান শুরু করেছেন ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. মনোয়ারুল ইসলাম।
অভিযোগে নিম্নমানের ইউনিফর্ম সরবরাহ, অবৈধভাবে নিয়োগ প্রদান, ঘুষের টাকায় জমি-ফ্ল্যাটসহ নামে-বেনামে বিভিন্ন সম্পদ গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, নিম্নমানে ইউনিফর্ম সরবরাহের মাধ্যমে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের কমান্ড্যান্ট শহীদ উল্লাহ। এছাড়া ২০০০ সালের ইন্সপেক্টর হিসেবে পদোন্নতির পর থেকে টানা ২৪ বছর ধরে ঢাকায় রেলের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত রয়েছেন তিনি। একটানা কাজ করার সুবাদে সেখানে তৈরি করেছে দুর্নীতি বড় সিন্ডিকেট। ক্ষমতা অপব্যবহার ও নানা অনিয়ম করে গড়েছেন কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২১-২২, ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ইউনিফর্ম, বুট, মোজা, রেইনকোট, ফগার মেশিন, হ্যান্ড মাইক বিতরণ সংক্রান্ত কাগজ, আরএনবির বিভিন্ন মালামাল ক্রয়ের দুর্নীতি করেন শহীদ উল্লাহ। এছাড়া ২০১৮ সালে ১৮৪ জন সিপাহী নিয়োগে অন্তত ৮৩ জনকে দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ঢাকায় পাঁচটি ফ্ল্যাট, কুমিল্লায় ৩০ বিঘা জমি, শাশুড়ির নামে ঢাকার অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাটও কিনেছেন শহীদ উল্লাহ। ঢাকার শান্তিনগরে অবস্থিত রূপায়ণ টাওয়ারের তৃতীয় তলায় শাশুড়ির নামের ওই ফ্ল্যাট বর্তমানে স্ত্রী-সন্তানসহ থাকেন তিনি। অথচ শাশুড়ির আয়ের কোনো উৎস নেই। ফ্ল্যাটটির দাম অন্তত তিন কোটি টাকা। ওই ফ্ল্যাটের পাশেই রয়েছে তার আরও একটি ছয়তলা ভবন। একইসঙ্গে ঢাকার উত্তরায় তিনটি, রাজধানীর মুগদাপাড়ায় আরও দুটি প্লট আছে তার।
জানা গেছে, ১৯৮৬ সালের ২৭ নভেম্বর আরএনবিতে যোগ দেন শহীদ উল্লাহ। ট্রেনিং শেষ ১৯৮৭ সালের ২ মে এএসআই পদে প্রথম নিয়োগ লাভ করেন তিনি। ১৯৯৯ সালের ১২ মার্চ তিনি এসএস হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০০০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি হয় তার। এই পদোন্নতির পর নতুন কর্মস্থল হয় ঢাকার তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে। ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি চিফ ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি হয়। ২০১৭ সালের ৯ মে (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সহকারী কমান্ড্যান্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সহকারী কমান্ড্যান্ট পদ লাভ করেন।
এরপর ২০২২ সালের ৯ জুন পদোন্নতি পেয়ে কমান্ড্যান্ট হন শহীদ উল্লাহ। বর্তমানে ওই পদে ঢাকা বিভাগে কর্মরত রয়েছেন এ কর্মকর্তা। ২০০০ সাল থেকেই তিনি ঢাকায় বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত আছেন।
ডিজে