নিজেই ক্রাইম করে বেড়ায় সিটিজি ক্রাইমের মানিক

প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন

দীর্ঘদিন ধরে সিটিজিক্রাইম অনলাইন ইউটিউব নামক একটি একাউন্ট খুলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মানুষের নামে হয়রানিমূলক তথ্য প্রকাশ ও চাঁদাবাজি করে আসছে আজগর আলী মানিক নামের একব্যক্তি। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে সোমবার (২ নভেম্বর) নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা। মানববন্ধনে তারা আজগর আলী মানিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সিটিজিক্রাইম নামক ভুয়া একাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভুয়া সিটিজি অনলাইন ইউটিউবে মানুষের নামে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে আজগর আলী মানিক। তার চাঁদাবাজিতে শিকার হয়ে অনেকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে। যদি কেউ চাঁদা দিতে না চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মনগড়া তথ্য প্রকাশ করে এবং নিজেকে মূলধারার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ফোন করে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।

তার খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যে অনেকে নীরবে চাঁদা দিয়ে নিজের মানসম্মান রক্ষা করলেও যারা চাঁদা দেয় না তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে আজগর আলী মানিক। তার হয়রানির শিকার হয়ে অনেকে আদালতে মামলা ও থানায় অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, সিটিজি ক্রাইম অনলাইন ইউটিউবের পরিচালক কথিত যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনু ও চেয়ারম্যান বাঁশখালীর আজগর আলী মানিক। নুর মোস্তাফা টিনু ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে থাকলেও তার সহযোগী মানিকের চাঁদাবাজি থেমে নেই। বরং টিনুকে ক্রসফায়ার থেকে বাঁচিয়েছে বলে মানুষকে ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তার চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রক টিনু বলে একাধিক মানুষকে ফোন করে চাঁদা দাবিও করেছে মানিক। যার একাধিক অডিও সংরক্ষিত রয়েছে।

ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন ফরহাদ বলেন, ‘সম্প্রতি আমাকে ক্যাসিনো, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সিটিজিক্রাইমে তথ্য প্রকাশ করে। পরে এসব তথ্য প্রকাশ করবে না বলে আজগর আলী মানিক আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি প্রকাশিত তথ্যটি ভুয়া দাবি করলে সে টাকা দিলে সেটি মুছে ফেলা হবে বলেও জানায়। আমি চাঁদা না দিলে মানিক আমাকে জড়িয়ে আরও বেশকিছু তথ্য প্রকাশ করে। পরে আমি সিটিজি ক্রাইম অনলাইন ইউটিউবের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করি।’

আরেক ভুক্তভোগী ফার্মেসি ব্যবসায়ী নুরুর কাছে ফোন করে তথ্য প্রকাশের অডিওতে শোনা যায়, মানিক তাকে বদনা চোরসহ নানা ধরণের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তথ্য প্রচারের হুমকি দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। তিনি নিজেকে বড় সাংবাদিক ও নুর মোস্তাফা টিনুর সহযোগী এবং টিনুকে র্যাবের ক্রসফায়ার থেকে বাঁচিয়েছে বলে ক্ষমতার জাহির করে বলেন, আমি এলাকায় অনেক বড় সাম্বাদিক (সাংবাদিক)। আমার অনলাইন ইউটিউবে তথ্য প্রচার হলে তা ফেসবুকে লাখ লাখ শেয়ার হয় এবং তা দুদকের নজরে পড়লে চরম ক্ষতি হবে। এমন ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন সে। পরে কোনো উপায় না দেখে নুরু পাঁচলাইশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

মানিক খোরশেদ আলম নামের একব্যক্তিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে তথ্য প্রকাশ করে চাঁদা দাবি করায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী। এছাড়া চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে আজগর আলী মানিকের বিরুদ্ধে এক মামলা করেন ভুক্তভোগী নুরুল আলম ও ৩টি মামলা করেন ভুক্তভোগী ইফতেখার।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!