কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজুম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা গ্রামের জেলে গিয়াস উদ্দিন সাগরে গিয়ে রহস্যজনকভাবে চার দিন ধরে নিখোঁজ। এ ঘটনায় তার পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
নিখোঁজ গিয়াস উদ্দিন (৩৮) ঘটিভাঙ্গা মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত সাহাব মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বাবুলের মালিকানাধীন একটি মাছ ধরার ট্রলারে মাঝি হিসেবে কাজ করতেন। তবে ঘটনার পর থেকে থানায় অভিযোগ দিতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে তার পরিবার।
নিখোঁজ গিয়াস উদ্দিনের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে নিখোঁজ গিয়াসের কিছু ছেঁড়া কাপড় পাওয়া গেলেও তার সন্ধান মেলেনি।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি কাইছার হামিদ বলেন, ‘থানায় কোনো জিডি হয়নি, তবে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’
নিখোঁজের ঘটনায় জামাল উদ্দিন ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন—মৃত কালা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৪২) ও মো. জাফর (৪৪), আশরাফ মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম (৩৮), মো. লালুর ছেলে আব্দু সালাম (৩০), ওমর হাজীর ছেলে নুরুল কবির (৫২) এবং কোরবান আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৪০)। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১১ ডিসেম্বর গিয়াস উদ্দিন অভিযুক্তদের সঙ্গে সাগরে মাছ ধরতে যান। পরদিন বরশির খাদ্য উপাদান শেষ হলে ট্রলারটি কক্সবাজার ফিশারিঘাটে ফিরে আসে। এরপর একইদিন সন্ধ্যায় আবার সাগরে যান।
সোনাদিয়া দ্বীপের অদূরে নোঙর ফেলে রাতের খাবার শেষ করার পর অভিযুক্তদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয় গিয়াস উদ্দিনের। পরে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে ভোরে দেখা যায়, তিনি ট্রলারে নেই।
গিয়াস উদ্দিনের ছোট ভাই জামাল অভিযোগ করেন, অভিযুক্তরা তার ভাইকে হত্যা করে সাগরে ফেলে দিয়েছে। তার ভাষায়, ‘তাদের আচার-আচরণ সন্দেহজনক। তাই প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাই।’
তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই মো. ফরাজুল ইসলাম জানান, ‘আমরা অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। অভিযুক্ত পাঁচজনকে থানায় ডেকে আনা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
গিয়াস উদ্দিনের নিখোঁজ হওয়া নিছক দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এ প্রশ্ন এখন তার পরিবার এবং স্থানীয়দের মনে। পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে এই রহস্যের সমাধান আসবে—প্রত্যাশা সবার।
জেজে/ডিজে