‘নারীরা ব্যাংকের ঋণখেলাপি হয় না’ উল্লেখ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিলেও নারীরা তা পরিশোধ করতে চান। তাই নারীদের মাঝে ঋণখেলাপি নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় নারীরা যেন আরো বেশী ঋণ পান সে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে হোটেল আগ্রাবাদে ১৩তম ইন্টারন্যাশনাল উইমেন’স এসএমই এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘ট্যাক্স ও ভ্যাট সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। কারণ সরকার নিজে ব্যবসা করে না। তাই সরকারকে ট্যাক্স ও ভ্যাট দিতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারকে এ টাকা দিতে হবে। এটি সরকারে ন্যার্য পাওনা। যাদের সামর্থ আছে তারা অবশ্যই সরকারি ভ্যাট ও টেক্স দিতে বাধ্য।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। এক মাসের মেলা আরও এক সপ্তাহ বেশি চলেছে। আমার মনে হচ্ছে এ মেলার মাধ্যমে আরও নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এদেশের মানুষ খুব মেধাবী। ছোট থেকে বড় উদ্যোক্তা তৈরি হন। প্রচুর মানুষ আছে। তাই এদেশের দ্রুত সমৃদ্ধি হবে এতে সন্দেহ নেই। মানুষ বাড়ছে কিন্তু কোনো চাপ অনুভব হয় না। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর কারণেই নারীদের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখছি, উল্লেখ করে বিশেষ অতিথি বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য নিরাপত্তা দরকার। আমাদের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ ৮০ বছর পর ‘নারীস্থান’ হয়ে যাবে। চট্টগ্রামে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অনলাইন, মিডিয়া, ব্যাংক নারীদের সহায়তা করছে।’
চট্টগ্রামের নারী উদ্যোক্তারা সেই কঠিন কাজটি সফল করেছেন উল্লেখ করে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এসএমই খুব বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে না আমাদের দেশে। চীন, জাপানে এসএমইর ভিত্তি মজবুত। সিডব্লিউসিসিআই মাসব্যাপী এসএমই ফেয়ারে আয়োজন করেছে। এটা কঠিন কাজ। চট্টগ্রামের নারী উদ্যোক্তারা সেই কঠিন কাজটি সফল করেছেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি চবির এক ছাত্রী বাসে একা সাহসের সঙ্গে লড়ে বাসচালক ও সহকারীর লালসা থেকে মুক্তি পেয়েছে। আমাদের নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।’
পুনাক সভানেত্রী মির্জা মাহাবুবা সোমা বলেন, ‘দেড় বছর সিএমপি পুনাকে আছি। এবার মেলায় অংশগ্রহণ করি। পুনাক আমার কাছে আবেগের নাম। নিরলস পরিশ্রমের ফসল আমাদের প্রতিটি পণ্য। সমাজের অসহায় দুস্থ মানুষকে সহায়তা করি। বাণিজ্যমেলায়ও স্টল চেয়েছি পুনাকের জন্য।’
স্বাগত বক্তব্যে সিডব্লিউসিসিআই এর সিনিয়র সহ সভাপতি ড. মুনাল মাহবুব বলেন, ‘আমরা নারী, আমরা সব পারি। এটি প্রমাণ করেছি মাসব্যাপী মেলায়। রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, রাঙামাটিসহ দেশের শতাধিক নারী উদ্যোক্তা মেলায় স্টল দিয়েছেন, ক্রেতাদের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করেছেন।
এবার আমরা ১৪ ব্যাংকের অংশগ্রহণে ষষ্ঠ এসএমই ব্যাংকিং ম্যাচিং ফেয়ার, ফ্যাশন ফেস্টিভ্যাল, পেঁয়াজ ছাড়া রান্না, ইন্দোনেশিয়ান রান্না প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। অটিস্টিক বাচ্চাদের মায়ের হাতে তুলে দিয়েছি মোবাইল ফোনসেট।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা মনোয়ারা হাকিম আলী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এবি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার এসএম শাহজাহান, সিডব্লিউসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবিদা মোস্তফা, নারী উদ্যোক্তা বেবী হাসান প্রমুখ। মেলায় সেরা স্টল হিসেবে ‘পুনাক’কে পুরস্কৃত করা হয়।
এএস /এসবি