নামের মিলেই ১৮০ দিন কারাগারে, গোয়েন্দা পুলিশের জালে আসল নুরু

নামের মিল থাকায় গত ৬ মাস ধরে কারাভোগ করছেন নাইক্ষ্যংছড়ির জারুলিছড়ির নুরুল আমিন নুরু (২৬) নামে এক নিরাপরাধ যুবক। ইয়াবা উদ্ধারের একটি মামলায় তাকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু ৬ মাস পর ডিবি পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আসল রহস্য। একই সঙ্গে ডিবির জালে আটকা পড়েছে আসল অপরাধী।

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) নাইক্ষ্যংছড়ির জারুলিয়াছড়ি এলাকা থেকে আসল আসামি নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। সে মিয়ানমার নাগরিক আশরু মিয়ার ছেলে।

আসামি নুরুল আমিন শ্বশুর মনিরুজ্জামানকে পিতা দেখিয়ে ভূয়া আইডি কার্ড তৈরি করে বাংলাদেশের নাগরিক বনে যায়। নিরাপরাধ নুরুল আমিন ওরফে নুরু হলেন একই এলাকার নুর ছালামের ছেলে।

জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল রামুর চা-বাগানের নাইক্ষ্যংছড়ি রাস্তার মাথায় মোহাম্মদ রশিদ প্রকাশ খোরশেদ নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এ সময় ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিক স্বীকারোক্তিতে খোরশেদ তার সিন্ডিকেটের নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেন, মো. বেলাল, বশির আহমদ, মাহমুদুর রহমানের নাম জানায় ডিবি পুলিশকে।

এ সময় সে আরও জানায়, রাস্তার মাথা থেকে আধা কিলোমিটার ভেতরে তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে অবস্থান করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযানে গেলে ডিবির সাথে ইয়াবা কারবারিদের গোলাগুলি হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান খোরশেদ। এই ঘটনায় ডিবি পুলিশ বাদি হয়ে রামু থানায় নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেন, মো. বেলাল, বশির আহমদ, মাহমুদুর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। তবে নুরুল আমিনের পিতার নাম উল্লেখ ছিল না। সে কারণে আসল অপরাধী নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেনের স্থলে নুরুল আমিন নুরুকে গত ২১ জুলাই আটক করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিরাপরাধ নুরুল আমিন ওরফে নুরুর পরিবার যোগাযোগ করলেও কেউ আমলে নেয়নি। পরে বর্তমান ডিবির ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বিষয়টি জানার পর নাইক্ষ্যংছড়িতে অনুসন্ধান শুরু করেন। এক পর্যায়ে নিশ্চিত হন আসল অপরাধী নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেনের পরিবর্তে কারাভোগ করছে নিরপরাধ নুরুল আমিন নুরু। পরে ডিবির ওসি শেখ মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে আসল অপরাধীকে আটক করা হয়। এরপর ১০ ডিসেম্বর আদালতে আসল আসামি নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেনকে সোপর্দ করে নিরাপরাধ নুরুল আমিন নুরুকে জামিনের আবেদন করে ডিবি।

ডিবির ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, নুরুল আমিন ওরফে ইমাম হোসেন একজন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি। সে রোহিঙ্গা নাগরিক। দীর্ঘ তদন্তের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!