চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষের গণ বিরোধী পানির মূল্য ৬২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণ জমায়েত কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম গণ অধিকার ফোরাম নামের একটি সংগঠন।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনা প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। গণ জমায়েত শেষে মিছিল নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহার মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে স্মারকলিপিও দিয়েছে সংগঠনটি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম শহরে ৬০ লাখ মানুষ বসবাস করে। অধিকাংশ নগরবাসী দারিদ্র সীমার নিচে বাস করছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা গত সাত বছরে ৭ বার পানির দাম বৃদ্ধি করেছে। মাত্র ৬ মাস আগেও অযৌক্তিকভাবে ওয়াসা পানির দাম বাড়িয়েছে। ওয়াসা আইন অনুযায়ী ওয়াসা বছরে একবার মাত্র ৫ শতাংশ হারে পানির দাম বাড়াতে পারে। আর মুদ্রাস্ফীতিজনিত কারণে বা প্রয়োজনে ওয়াসা পানির দাম বাড়াতে পারে। এই সুযোগ নিয়ে ওয়াসা পানির দাম ৬২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে; যা চট্টগ্রাম শহরের ৬০ লাখ নগরবাসীকে চরম ভোগান্তিতে ফেলবে এবং বর্তমান সরকারকে জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিপাকে ফেলবে।’
ওই স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ওয়াসার সেবার মান অত্যন্ত নিম্ন। অনেক এলাকায় দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত পানি সরবরাহ করা হয়। ফলে নগরবাসী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিকার হচ্ছে। শুধু তাই নয়; উন্নয়নের নামে শহরের অধিকাংশ এলাকায় খোঁড়া পর মাটি রাস্তায় ফেলে চট্টগ্রাম নগরীকে বালি উড়ার শহরে পরিণত করেছে; যা চট্টগ্রামবাসীকে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। সেবার মান উন্নত না করে, জনস্বার্থে যাচাই-বাছাই ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই দাম বৃদ্ধি যেমন অগ্রহণযোগ্য তেমনি বেআইনী। গণবিরোধী ওয়াসার পানির দাম ৬২ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে অবিলম্বে বাতিল করুন। নাগরিক সেবা দিতে চট্টগ্রাম ওয়াসা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। এর মধ্যে পানির দাম বৃদ্ধি করা কোনভাবে যুক্তি সঙ্গত নয়। ৬০ লাখ নগরবাসীকে পানির দাম বৃদ্ধি করে মরণ ফাঁদে ফেলবেন না।’
বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে স্মারকলিপিতে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হয়।
এদিকে মিছিলপূর্ব গণ জমায়েতে বক্তারা বলেন, ‘৬০ লাখ নগরবাসীর রায় না নিয়ে পানির মূল্য ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি করবেন না। এভাবে মূল্যবৃদ্ধি করার অধিকার চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ রাখে না। আশা করি স্থানীয় মন্ত্রণালয় জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে পানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকবে। পূর্বের ন্যায় পানির মূল্য বজায় রাখুন।’
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মহাসচিব এমএ হাশেম রাজু, ভাইস চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হাকিম লোকমান, মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, মোহাম্মদ সোলায়মান বাদশা, সহকারী মহাসচিব জানে আলম, মোহাম্মদ ইউসুফ, কালু চৌধুরী প্রমুখ।
এমএ/এসএস