নবজাতক রাতে পড়েছিল পার্কে, উদ্ধার করলো আড্ডারত তরুণের দল

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার জাতিসংঘ পার্কের পাশে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন সাদেক রেজা। ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন ১০টা। হঠাৎ একটি প্রাইভেট কার থেকে কি যেন একটা ছুঁড়ে ফেলা হলো সেখানে। ময়লা আবর্জনা ভেবে প্রথমে তেমন গুরুত্ব দেয়নি তারা।

কিছু সময় যেতেই ওই স্থান থেকে ভেসে আসতে লাগলো কান্নার শব্দ। দৌঁড়ে গিয়ে তারা দেখলো, পুঁটলিতে বাঁধা একটি নবজাতক শিশু।

রোববার (২৪ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার জাতিসংঘ পার্কের পাশেই এই নবজাতককে ফেলে চলে যায় কেউ।

এই তরুণের দল ঘাবড়ে না গিয়ে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করলো বাচ্চাটিকে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তিও করায় তারা। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই শিশুটিকে নিউরোসার্জারী বিভাগে ভর্তি করান।

নিউরোসার্জারি বিভাগে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক জানান, শিশুটি সম্পুর্ন সুস্থ রয়েছে। তবে তার কপালে একটি জন্মগতভাবে মাংসপিন্ড রয়েছে। যদিও সেটি অপারেশনের মাধ্যমে সারিয়ে নেওয়া যাবে।

প্রত্যক্ষদর্শী চকবাজার থানা ছাত্রলীগ নেতা মো. সাদেক রেজা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা ৬ বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ একটি কার থেকে বাচ্চাটিকে ছুঁড়ে ফেলা হলো। যখন বুঝতে পারি ওটা বাচ্চা তখন আমার সাথে থাকা বন্ধু মানিক, রাসেল, জুয়েল, মিঠুন, মো. আবুু নাসের, সজল, বিশ্বজিৎসহ আমরা বন্ধুরা বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু বাচ্চাটির কোনো জন্মপরিচয় না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে চিকিৎসা দিতে গড়িমসি শুরু করে। পুলিশি ঝামেলা শেষে শিশুটির চিকিৎসা পেতে প্রায় তিন ঘণ্টা দেরি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাচ্চাটিকে নিয়ে হাসপাতালের নিচতলা থেকে উপর তলা কয়েকবার উঠানামাও করতে হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের অসহযোগিতার জন্য। কয়েকটি ওয়ার্ডের ঘুরানোর পর বাচ্চাটিকে নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এরপর মানিক, জুয়েল ও রাসেল সারারাত বাচ্চাটির সাথে ছিলো। এখন কোনো স্বচ্ছল পরিবার যদি বাচ্চাটির দায়িত্ব নেয় তবে এই হতভাগা শিশুটির জীবন অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা পাবে।’

বাচ্চাটিকে হাসপাতালে ভর্তির সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল বাবুল চাকমা।

তিনি জানান, ‘সাদেক রেজাসহ তার বন্ধুরা নবজাতক শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। যদি কেউ এই নবজাতকের ভরনপোষণের দায়িত্ব নিতে চান তাহলে ভাল হয়।’

বিএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm