নগর যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্কর, নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগর যুবদলও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন কার্যালয় মাঠে। এক পর্যায়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর সেখানে উপস্থিত হলে যুবদল সভাপতি মোশাররফ হোসেন চেয়ার ছেড়ে তাঁকে নিজের চেয়ারে বসান। এরপর আবুল হাশেম বক্করকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান যুবদল নেতৃবৃন্দ। এতে নেতাকর্মীরা যুবদল নেতাদের প্রশংসা করে বলেন, কাউকে সম্মান দিলে নিজেদের সম্মান বাড়ে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নগর নেতাদের বক্তব্য চলাকালে এ ঘটনার অবতারণা হয়।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পান নগর বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। নির্বাচন নিয়ে নগর বিএনপির প্রস্তুতি সভাও ছিল একই সময়ে, একই স্থানে। আবুল হাশেম বক্কর মূলত এসেছিলেন নগর বিএনপির কর্মসূচিতে।

এ বিষয়ে নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি আমাদের অভিভাবক সংগঠন। আবুল হাশেম বক্কর ভাই নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি যুবদলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন নগর যুবদলের সভাপতিও। বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় তাঁকে সব সময় আমরা কাছে পাইনা। আজ পেয়েছি, এটা আমাদের নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করবে।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকার কারণে যুবদলের সব কর্মসূচিতে যেতে পারিনা। অনেক গ্রোগ্রামেইতো যাই। আমাদের মাঝে কোনও দূরত্ব নেই। ওরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন, আমরা একই পরিবারের সদস্য।

উল্লেখ্য, যুবদলের সাবেক নেতা শামসুল হক নগর যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান শপথ ছিলেন যুবদলের সেক্রেটারি প্রার্থী। এই দুই নেতার স্থান নগর যুবদলেও হয়নি, হয়নি কেন্দ্র ঘোষিত ১১৪ জনের বিশাল কমিটিতেও। শামসু-শপথ দুইজনই আবুল হাশেম বক্করের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

গত ১ সেপ্টেম্বর নগর বিএনপির সমাবেশে যুবদলের জিল্লুর রহমান জুয়েলের উপর হামলার ঘটনা শামসুসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। শামসুর অনুসারীরা আবার দিপ্তী-শাহেদ-জুয়েলদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। কেন্দ্রীয় যুবদলের হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা সমাধান হলেও মানসিক দূরত্ব কমেনি বলে জানা গেছে।

সমাবেশে আবুল হাশেম বক্কর বলেন, মামলা হামলা বর্বরতায় ক্ষমতায় টিকে আছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় ভীত আওয়ামী লীগ। মিথ্যা প্রহসনের মামলার জালে কারাগারে দেশনেত্রীকে বন্দি করে রেখেছে। তিনি এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর উপর পুলিশী হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান ইউসুফ বিন জলিল কালু বলেন, কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মৌলিক অধিকার, তার প্রকৃত চিকিৎসা ও ন্যায্য জামিনের বিষয়ে সরকার আদালতের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম তিতাস, নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জামান ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরুল আজিম সুমন।

নগর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ পরিচালনা করেন সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর যুবদলের সহ-সভাপতি নূর আহমদ গুড্ডু, এসএম শাহ আলম রব, সাহেদ আকবর, ফজলুল হক সুমন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!