নগরে ৬ খাদ্যপণ্য নিয়ে টিসিবির ৩০ ট্রাক, দিনে বিক্রি ৪ হাজার টন

'আমাদের মতো গরীব মানুষদের জন্য এই ভালো'

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ৩০টি ট্রাক ৬টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে ঘুরছে চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে। রমজান ও লকডাউনের এ দুঃসময়ে কমমূল্যে এসব পণ্য কিনতে পেরে খুশী সাধারণ মানুষ।

পণ্যের দামের উত্তাপের বিপরিতে মাস্ক পরে শারিরিক দূরত্ব রক্ষায় আকাঁ বৃত্ত চিহ্নে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাইন ধরে বিসিবির ট্রাক থেকে কমদামের পণ্য কিনছেন সাধারণ মানুষ।

কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি। করোনাকালে লকডাউনের সময় দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় বাজারমূখী হতে ভয় নগরের মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের। এসময়ে নগরের বিভিন্ন জনবহুল স্থানে টিসিবির কমমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিক্রি কিছুটা স্বস্তি এনেছে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের মনে।

নগরের জামালখান মোড়ে পণ্য কেনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাসা রহমতগঞ্জ। সেখান থেকে সপ্তাহে একবার এসে আমি এখান থেকে তেল চিনি, পেঁয়াজ ও অন্যান্য পণ্য কিনে নিয়ে যায়। বাসার পাশে মুদি দোকানে যা দাম এখানে তার চেয়ে অনেক কম দামে পাচ্ছি। যদিও সব পণ্য ততটা মানসম্মত নয়, তবু মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটা অনেক বড় বিষয়। একসাথে বাজারে কিছু টাকা সাশ্রয় হচ্ছে, তাও বা কম কি।

কথা হয় সিটি করপোরেশন পরিচালিত একটি আর্বান হেলথ কমপ্লেক্সের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রিতি নন্দীর সাথে। তিনি বলেন, জামালখান বাই লেন থেকে আসছি। যে টাকা বেতন পাই, সে টাকা দিয়ে সংসার চালানো কষ্ট, তাই কোথায় একটু কম দামে পাওয়া যায় সে খোঁজ করি। কষ্ট হলেও আমাদের মতো গরীবদের জন্য এই ভালো।

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১শত টাকা, খেজুর কেজি ৮০ টাকা, চিনি, ছোলা ও মসুর ডাল কেজি প্রতি ৫৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে ।

নগরের অক্সিজেন, বিবিরহাট, মুরাদপুর, বহাদ্দার হাট পুলিশ বক্সের সামনে, ২ নম্বর গেট, গোল পাহাড়, এনায়েত বাজার, দামপাড়া পুলিশ লাইন, বড় পোল, লালখান বাজার, ইস্পাহানি মোড়, চকবাজার, প্রেসক্লাব, আন্দরকিল্লা, নিউমার্কেট, আদালত ভবন গেট, দেওয়ানহাট, হালিশহর এ ব্লক, আগ্রাবাদ, বন্দর, কাস্টমস হাউসের সামনে, স্টিলমিল বাজার, নেভি হাসপাতাল গেট, সিমেন্ট ক্রসিং বাজার, পাহাড়তলী বাজার, ঝাউতলা বাজার, স্টেশন রোড,ওয়ারলেস মোড় সহ বিভিন্ন জনবহুল স্থানে টিসিবির এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

৫৪ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০টি ট্রাকে করে নগরের জনবহুল স্থানে টিসিবি এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করছে। দৈনিক একটি ট্রাকে সয়াবিন তেল একহাজার দুইশ লিটার, পেঁয়াজ এক হাজার কেজি, ছোলা এক হাজার কেজি, চিনি সাতশত কেজি, মসুর ডাল একশ ৫০ কেজি করে ৩০ টি ট্রাকে দৈনিক প্রায় চার হাজার টান পণ্য বিক্রি করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিসিবির আঞ্চলিক প্রধান, মো.জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব মেনে নগরের বিভিন্ন জনবহুল স্থানে প্রতিদিন ৩০ টি ট্রাকে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ৬ টি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির পণ্য কেনার প্রতি মানুষের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার টন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

মেসার্স এসএম এন্টারপ্রাইজে মালিক অপু চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সামাজিক দূরত্ব মেনে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছি। প্রতি গ্রাহকের জন্য সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে চাকা দিয়ে বৃত্তাকার বানিয়ে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘মেসার্স এসএম এন্টারপ্রাইজ নগরের লালখান বাজারে ট্রাকে পণ্য গ্রাহকের হাতে তুলে দিচ্ছে। এসব পণ্য কম দামে কিনে ক্রেতারা সন্তুষ্ট। দৈনিক একটি ট্রাকে প্রায় ৪শত টন পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে।’

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!