পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানিতে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার শহরে বিমানবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে। এ ঘটনায় এক যুবক নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। নিহত যুবকের মাথার খুলি উড়ে গেলেও বিমানবাহিনী দাবি করেছে, ওই যুবক গুলিতে মারা যায়নি। তবে যুবকের পরিবার বলছে, বিমানবাহিনীর ছোঁড়া গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। এক যুবকের হেলমেট না পরার ঘটনা নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়— বিমানবাহিনী এমনটি দাবি করলেও স্থানীয়রা বলছেন, ওই যুবককে ঘটনার দুদিন আগেও বিমানঘাঁটির ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিমানবাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটির পাশে একটি চেকপোস্টে স্থানীয় এক যুবককে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর বিমানবাহিনী সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় এলাকাবাসী কক্সবাজার বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশে বিমানবাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিমানবাহিনী সদস্যদের এর পাল্টায় গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে। এ ঘটনায় শিহাব কবির নাহিদ (৩০) নামে এক তরুণ তার নিজ বাড়ির সামনে মারা যান। শিহাব মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে বিমানবাহিনীর ঘাঁটির দিকে ছুটে যেতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পর বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান সেখানে পৌঁছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে সরিয়ে দেন। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে পাঁচজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শনিবারও টানাটানি হয়েছিল যুবককে নিয়ে
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিমানঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য এলাকাবাসীকে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন স্থানীয় কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দা শিক্ষানবিশ আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম। গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার সময় বিমানঘাঁটির পার্শ্ববর্তী একটি চেকপোস্টে জাহিদকে আটকে দেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ওইদিন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাওয়ার পর বিমানবাহিনীর লোকজন জানায়, জাহেদ হেলমেট ছাড়া অবৈধভাবে আসছে। তখন আমরা বলি, উনি যদি অন্যায়ভাবে আসেন তাহলে আপনারা তার গাড়ি রেখে দেন। এরপরও তারা জাহেদকে ঘুষি-টুসি-ধাক্কা-টাক্কা দিয়েছে। এরপর এলাকাবাসী এসে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন বিমানবাহিনীর লোকজন জানায়, আপনারা একটা অভিযোগ করে যান। তখন জাহেদ লিখিত একটি অভিযোগ করে চলে যায়।’
কী ঘটেছিল সোমবার দুপুরে?
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার বিমানঘাঁটি থেকে ফোন করে শিক্ষানবিশ আইনজীবী জাহেদকে একা সেখানে আসতে বলা হয়। কিন্তু বেলা ১১টার দিকে জাহেদ এলাকার আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পথে বিয়াম স্কুলের পাশের চেকপোস্টে তাদের আটকে দেওয়া হয়। যদিও অপর একটি সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে বিমানবন্দর সম্প্রসারণে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য এলাকাবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা এবং এলাকাবাসীর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক নির্ধারিত ছিল। জাহিদসহ আরও কয়েকজন ইজিবাইক যোগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। চেকপোস্টে এ সময় জাহিদসহ অন্যদের আটকে দেওয়া হয়। তবে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেছেন, স্থানীয়দের সাথে তার কোনো পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ছিল না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানবাহিনীর কিছু সদস্য এ সময় জাহেদকে তাদের সঙ্গে ঘাঁটির ভেতরে যাওয়ার জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকেন। কিন্তু উপস্থিত অন্যরা তাতে বাধা দিলে একপর্যায়ে বেশ কয়েকটি গাড়িতে বিমানবাহিনীর আরও সদস্য চেকপোস্টে এসে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপস্থিত এলাকাবাসীদের কেউ কেউ এ সময় মোবাইলে তাদের স্বজনদের ঘটনা জানালে বিমানবাহিনীর সদস্যরা রাস্তার দুই দিক ব্লক করে দেয়। এর একপর্যায়ে জাহেদকে ঘাঁটির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
জাহেদকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে— এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীদের অনেকে ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে বিমানবাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটি ও সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এভাবে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিমানবাহিনী সদস্যদের গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে।
অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবাহিনীর একজন কর্মকতা উত্তেজিত জনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরই তিনি ফিরে যাওয়ার সময় তার বহনকারী অস্ত্রটি নিয়ে কিছু একটা ঘটে। কারও কারও দাবি, এ সময় ওই কর্মকর্তার অস্ত্র টান দেয় কেউ একজন। এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়। তখনই একজনকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায়। বিমানবাহিনীর সদস্যদের একযোগে গুলি করতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বলছেন
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমরা পাঁচ-ছয়জন টমটমে উঠছি। (জাহেদসহ) দুইজন মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের সামনে আছে। এর মধ্যে ডায়াবেটিক পয়েন্টে তাদের চেকপোস্টে তাকে থামিয়ে ফেলেছে। এরপর আমরা সেখানে পৌঁছার পর তারা (বিমানবাহিনীর সদস্যরা) আমাদের বলে, ‘ওনাকে আমাদের অফিসে যেতে হবে এখন।‘ তখন আমরা বলি, ‘কাজল (বিএনপি নেতা লুৎফুর রহমান কাজল) ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে আমরা আপনাদের অফিসে যাবো।’
ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘এরপর যতোক্ষণ পর্যন্ত তাদের ফোর্স বেশি না আসছে তারা (বিমানবাহিনীর সদস্যরা) অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তারা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও টানাহেঁচড়া করতে থাকে ওই ছেলেটাকে (জাহেদ) তুলে নেওয়ার জন্য। এ সময় আমাদের কেউ কেউ মোবাইলে ভিডিও তুলতে থাকলে বিমানবাহিনীর সদস্যরা রাস্তার দুই দিক ব্লক করে দেয়, যেন বাইরে থেকে কোনো মানুষ আসতে না পারে। এরপর জাহেদকে তারা তুলে নিয়ে যায়। আমাদের মধ্যে যারা মোবাইলে ঘটনার ভিডিও তুলেছিল, তাদের মোবাইলও ছিনিয়ে নেয়।’
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘বিমানবাহিনীর সদস্যরা জাহেদকে নিয়ে যাওয়ার পর আমরা সবাই কাজল (বিএনপি নেতা লুৎফুর রহমান কাজল) ভাইয়ের কাছে আসছি। অন্যদিকে জাহেদকে ধরে নিয়ে গেছে— এমন খবর পাওয়ার পর এলাকাবাসীদের অনেকে ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে উঠলে তাদের দিকে নির্বিচারে গুলি ছোঁড়া হয়।’
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশও বলেছেন, জাহিদুল ইসলাম নামের এক আইনজীবী সমিতিপাড়ায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে গেলে একটা পর্যায়ে বিমানবাহিনী তার গতিরোধ করে। যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে ওখানে মারধরের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু নিশ্চিত নই, তবে কিছু একটা হয়েছে। এরপর সমিতিপাড়ার লোকজন বিমানবাহিনীর ওপর চড়াও হয়। এ নিয়ে প্রথমে বাকবিতণ্ডা, ইটপাটকেল। এরর এয়ারফোর্স থেকে মনে হয় গুলিও চালিয়েছে।’
জানা গেছে, ওই ঘটনার পর বিকেল তিনটার দিকে আটক জাহেদকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকেও মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, জাহেদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার বাবা কক্সবাজার পৌরসভা বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি।
শিহাবের মৃত্যু কি গুলিতে?
কক্সবাজার বিমান ঘাঁটির কাছে গুলিতে যে তরুণ মারা গেছেন, সেটি বিমানবাহিনীর গুলি নয়— এমন দাবি করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে। আইএসপিআর বলছে, ‘গুলির খোসার ছবি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, উক্ত খোসাটি ফাঁকা গুলির (ব্ল্যাঙ্ক কার্টিজ)— যা প্রাণঘাতি নয় এবং শুধুমাত্র শব্দ তৈরি করে।’
তবে নিহত শিহাবের মা কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমেনা খাতুন হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিমান বাহিনী আমার ছেলের মাথায় গুলি করেছে।’
আমেনা খাতুন বলেন, ‘ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় শিহাব ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ একটি গুলি মাথায় এসে লাগে। গুলিতে মাথার খুলি উপড়ে মগজ বেরিয়ে আসে।’
নিহত শিহাবের বাবা কক্সবাজার প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) সাবেক সুপার নাছির উদ্দিন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গ এলাকায় বিলাপের সুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকালে আমি শহরে ডাক্তার দেখাচ্ছিলাম। হঠাৎ খবর এলো গুলিতে আমার ছেলের মাথার খুলি উড়ে গেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো। এখন আমার ছেলে মর্গে। আমার ঘরে গুলি কেন এলো? আমার সন্তান মরলো কেন? এর জবাব আমি কার কাছে চাইবো?’
স্থানীয় এলাকাবাসীও বলছেন, শিহাবের মৃত্যু হয়েছে গুলিতেই।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সবুক্তগীন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিহাবের মাথার পেছনের অংশ (খুলি) উড়ে গেছে।’ তবে সেটা গুলিতে নাকি ইটপাটকেলের আঘাতে হয়েছে— সেটি তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি।
নেপথ্যে উচ্ছেদ নিয়ে পুরনো বিরোধ
কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিমানবন্দর এলাকায় প্রায় ৭০ হাজার লোক বসবাস করেন। এর ৯০ শতাংশই ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি হারিয়ে কুতুবদিয়া, পেকুয়া, মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই এলাকার খাসজমিতে বসবাস করছেন। কক্সবাজারে বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য কয়েক বছর ধরে শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়া এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। উচ্ছেদের শিকার লোকজনের জন্য খুরুশকুলে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তুলে ইতিমধ্যে ৬০০ পরিবারকে সেখানে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। বর্তমানে আরও আড়াই হাজার পরিবারকে খুরুশকুল এলাকায় পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের তুলনায় এই সংখ্যা খুবই সামান্য। তাদের কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলছে না।
এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিমানবাহিনী ও প্রশাসনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বিরোধ চলে আসছে। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারিও ১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানান।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বিমানবাহিনীর ভাষ্য
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমানবাহিনীর ভাষ্য তুলে ধরে বলা হয়, ‘কক্সবাজারে অবস্থিত বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতিপাড়ার কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্ত সোমবার (২৪-২-২০২৫) তারিখে বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য যে, বিয়াম স্কুলের পাশে বিমান বাহিনীর চেকপোস্ট হতে একজন স্থানীয় লোকের মটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় বিমান বাহিনীর প্রভোস্ট কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সমিতি পাড়ার আনুমানিক দুই শতাধিকেরও বেশি স্থানীয় লোকজন বিমান বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে বাধা দেয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিমান বাহিনীর চেকপোস্ট এলাকায় বিমান বাহিনীর সদস্য ও সমিতি পাড়ার কতিপয় দুষ্কৃতকারী লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে কতিপয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা বিমান বাহিনীর সদস্যদের উপর ইট পাটকেল ছোড়ে। এসময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন, যার মধ্যে বিমান বাহিনীর ৪ জন সদস্য (১ জন অফিসার ও ৩ জন বিমানসেনা) আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমান বাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।’
আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমান বাহিনীর সদস্যগণ কর্তৃক বিমান বাহিনীর Rules of Engagement অনুয়ায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়, তবে স্থানীয় জনসাধারণের উপর কোন প্রকার তাজা গুলি ছোড়া হয়নি। বিমান বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, স্থানীয় জনগণের ইটপাটকেলের আঘাতে বিমান বাহিনীর গাড়ির কাচ ভেঙ্গে যায়। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল যা পরবর্তীতে বেশি সম্প্রসারিত হয়নি।’
সিপি